ক্বোরআনের তাফছীর (১৫তম পর্ব)

এটি উছতায আবূ ছা‘আদা হাম্মাদ বিল্লাহ c প্রদত্ত একটি ধারাবাহিক অডিও বক্তব্য। উক্ত ধারাবাহিক বক্তব্যে উছতায পবিত্র ক্বোরআনের ছূরা সমূহের তাফছীর প্রদান করবেন, إِن شَاء اَللّٰه। বক্তব্যের এই পর্বে উছতায তাফছীরের নিয়ম-নীতি ও ‘উলূমুল ক্বোরআন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। নিম্নোক্ত বইসমূহ উৎস হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে-

ক) আল ‘আল্লামা ‘আব্দুল্লাহ আছ্‌ ছা‘দী o রচিত এবং শাইখ সালিহ্‌ আল ‘উছাইমীন o কর্তৃক ব্যাখ্যাকৃত আত-তা‘লীক্ব ‘আলাল ক্বাওা‘য়ীদ আল-হিছান।
খ) আল ‘আল্লামা মুহাম্মাদ ‘আলী আস্‌ সাবূনী o রচিত আত্‌ তিবয়ান ফী ‘ঊলূমিল ক্বোরআন।
গ) আল-‘আল্লামা ছুয়ূতী o রচিত আল-ইতক্বান।

এছাড়াও ছালাফদের রচিত আরো কিছু বই থেকে সারাংশ উপস্থাপন করা হবে, إِن شَاء اَللّٰه।

এই পর্বেরও আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে- শাইত্বানের পরিচয় এবং ইছতি‘আযাহ বা أعوذ بالله من الشيطان الرجيم
১) ইছতি‘আযাহ কেন শুধুমাত্র “আল্লাহ” নামের দ্বারা চাইতে হবে? রাহ্‌মান বা রাহীম নামের দ্বারা কেন নয়?
আল্লাহ্‌র (0) যতগুলো নাম আছে, সেসমস্ত নামের উৎপত্তি এই “আল্লাহ” নাম থেকেই। আল্লাহ্‌র সমস্ত গুণ এই নামের মধ্যেই বিদ্যমান আছে। যেহেতু শাইত্বান আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু, তাই আমাদেরকে “আল্লাহ” নাম দিয়েই আল্লাহ্‌র (0) নিকটে সাহায্য চাইতে হবে।
২) ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন-

قَالَتۡ اِنِّیۡۤ اَعُوۡذُ بِالرَّحۡمٰنِ مِنۡکَ اِنۡ کُنۡتَ تَقِیًّا

অর্থাৎ- মারইয়াম বললেন- আমি তোমার থেকে পরম করুণাময়ের আশ্রয় প্রার্থনা করছি যদি তুমি আল্লাহভীরু হও। (ছূরা মারইয়াম- ১৮))
উক্ত আয়াতে মারইয়াম k কেন “রাহ্‌মান” নাম দিয়ে আল্লাহ্‌র (0) নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করলেন?
এর কারণ হলো- উক্ত আয়াত দ্বারা তিনি শাইত্বান থেকে নয় বরং (মানুষরূপী) জিবরীল থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। কারণ, মারইয়াম k তাঁর থেকে অনিষ্টের আশঙ্কা করছিলেন।
৩) ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন-

اِنِّیۡ عُذۡتُ بِرَبِّیۡ وَ رَبِّکُمۡ

অর্থাৎ- নিশ্চয় আমি আমার ও তোমাদের প্রতিপালকের আশ্রয় গ্রহণ করেছি।ছূরা আল গাফির- ২৭
উক্ত আয়াতে “রাব্ব” শব্দটি দিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করার কারণ হলো, এখানে মূছা k হিসাব দিবসে অবিশ্বাসী প্রত্যেক অহংকারী থেকে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।
৪) ক্বোরআনে কারীমের অন্য আয়াতে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন-

وَ قُلۡ رَّبِّ اَعُوۡذُ بِکَ مِنۡ هَمَزٰتِ الشَّیٰطِیۡنِ وَ اَعُوۡذُ بِکَ رَبِّ اَنۡ یَّحۡضُرُوۡنِ

অর্থাৎ- আর বলুন! “হে আমার প্রতিপালক! আমি শাইত্বানের কুমন্ত্রণা হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, হে আমার প্রতিপালক! যাতে তারা আমার কাছে আসতে না পারে”।ছূরা আল মু’মিনূন- ৯৭-৯৮
উক্ত আয়াতেও আল্লাহ 0 রাছূলুল্লাহ-কে (1) “রাব্ব” শব্দটি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর কারণ কি?
এর কারণ হলো, এই আয়াতে শাইত্বানের যে ধরনের কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয়ের কথা বলা হচ্ছে, তা সবসময় ততোটা প্রবল হয় না। তাই এক্ষেত্রে “রাব্ব” নামের কাছেই আশ্রয় চাওয়া যথেষ্ট।
৫) রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- শাইত্বান তোমাদের প্রতিটি কাজে এসে (তোমাদের কাজের ক্ষতি করার জন্য) উপস্থিত হয়।সাহীহ্‌ মুছলিম
তাহলে আমরা ইছতি‘আযাহ দিয়ে আমাদের প্রতিটি কাজের সূচনা করি না কেন?
এর কারণ হলো, যেমন- আমরা যখন খেতে বসি, তখন শাইত্বান খাদ্যের বারাকাহ নষ্ট করার জন্য হাজির হয়। তাই খাওয়ার শুরুতে যখন আমরা বিছমিল্লাহ বলি, তখন শাইত্বান আর সেই খাবারের বারাকাহ নষ্ট করতে পারে না।
৬) শাইত্বানের ব্যাপারে ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন-

ثُمَّ لَاٰتِیَنَّهُمۡ مِّنۡۢ بَیۡنِ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ مِنۡ خَلۡفِهِمۡ وَ عَنۡ اَیۡمَانِهِمۡ وَ عَنۡ شَمَآئِلِهِمۡ وَ لَا تَجِدُ اَکۡثَرَهُمۡ شٰکِرِیۡنَ

অর্থাৎ- এরপর আমি অবশ্যই তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকে, তাদের পেছন দিক থেকে দিয়ে, তাদের ডান দিক থেকে, তাদের বাম দিক থেকে, আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না।ছূরা আল আ’রাফ- ১৭
উক্ত আয়াতে দেখা যাচ্ছে যে, শাইত্বান উপর ও নিচ দিক থেকে আক্রমণ করার কথা বলেনি। এর কারণ কি?
এর কারণ হলো, এই দুই দিক থেকে আক্রমণ করার ক্ষমতা তাকে আল্লাহ 7 দেননি। কারণ, উপরের দিকে আল্লাহ্‌র (0) ‘আর্‌শ অবস্থিত। আর নিচের দিকে ঝুঁকে যেহেতু বান্দাহ আল্লাহ্‌কে (0) ছাজদাহ করে, তাই এদিক থেকেও সে বান্দাকে আক্রমণ করতে পারবে না।

 

ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া হয়-
১) খাবারের মধ্যে বারাকাত বলতে আমরা কী বুঝবো?
২) আমাদের পরিবারের অনেকেই মনে করেন যে, কোন রৌপ্যের মধ্যে ক্বোরআনুল কারীমের আয়াত খোদাই করে তা গলায় পরিধান করা যায়। এরূপ ধারণা কি সঠিক?
৩) কুকুর ও গাধার ডাক শুনলে কেন ইছতি’আযাহ পড়তে হয়? কোন নির্দিষ্ট সময়ে ডাকলে পড়তে হবে নাকি যেকোন সময়ে ডাক শুনলেই পড়তে হবে?
৪) যদি কোন মহিলা মোবাইল-ফোনের মাধ্যমে দ্বীনী শিক্ষা দিয়ে থাকেন, তাহলে পুরুষরা কি তা শুনতে পারবে? যেসব মহিলাদের দ্বীনী জ্ঞান রয়েছে, তারা কিভাবে সেই জ্ঞান অপর মহিলাদের কাছে পৌঁছাবেন?


১. ছূরা আল গাফির- ২৭ 
২. ছূরা আল মু’মিনূন- ৯৭-৯৮ 
৩. সাহীহ্‌ মুছলিম 
৪. ছূরা আল আ’রাফ- ১৭ 

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close