এই অডিওটি হলো আশ্শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু সালিহ্ আল ‘উছাইমীন o কর্তৃক ব্যাখ্যাকৃত ইমাম ইবনু ক্বোদামাহ আল মাক্বদিছী o এর সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ “লুম‘আতুল ই‘তিক্বাদ” এর ধারাবাহিক অডিও ভাষান্তর। বাংলা ভাষায় অডিওরূপে এটি ভাষান্তর করেছেন উছ্তায আবূ ছা‘আদা হাম্মাদ বিল্লাহ c। এতে ছালাফে সালিহীনের (4) আক্বীদাহ-বিশ্বাসের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। আহলুছ্ ছুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ‘উলামায়ে কিরামের চিরাচরিত স্বভাব–বৈশিষ্ট্যও হলো যে, তারা তাদের লিখনীর মাধ্যমে সর্বাগ্রে বিশুদ্ধ ইছলামী ‘আক্বীদাহ সংরক্ষণ এবং তা প্রচার ও প্রসার করে থাকেন।
ক্বিয়ামাতের বড় বড় ‘আলামতগুলো সম্পর্কে আলোচনার ধারাবাহিকতায় এ পর্বে উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c দা-ব্বাতুল আরদ্ব সম্পর্কে নিম্নোক্ত বিষয়াদী আলোচনা করেছেন:-
১) আভিধানিক অর্থে “দা-ব্বাতুন বা “দা-ব্বাতুল আরদ্ব” বলতে পৃথিবীপৃষ্ঠে যা কিছু চলাচল করে সেসব বস্তুকে বুঝায়। আর এখানে “দা-ব্বাতুল আরদ্ব” দ্বারা উদ্দেশ্য হল- এটি এমন একটি জন্তু, যাকে ক্বিয়ামাতের একটি বড় ‘আলামত হিসেবে আল্লাহ্ মাটির নিচ থেকে বের করবেন। এটিযে ভূপৃষ্ঠে অবস্থানরত কোনো জন্তু নয় তা ক্বোরআন ও হাদীছের বর্ণনা থেকে প্রমাণিত। ক্বোরআনে কারীমে ছূরা আন্ নাম্ল এর ৮২ নং আয়াতে এর বর্ণনা পাওয়া যায় এবং সাহীহ্ মুছলিমের হাদীছেও এর বর্ণনা রয়েছে।
২) দা-ব্বাতুল আরদ্ব’ দেখতে কেমন হবে? ক্বোরআন ও হাদীছে এর স্পষ্ট কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না। তবে ক্বোরআন ও হাদীছ খেকে এ বিষয়টি জানা যায় যে, এটি মানুষের সাথে কথা বলবে এবং মানুষকে ক্বিয়ামাত সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন করবে।
৩) দা-ব্বাতুল আরদ্ব’ কোথা থেকে বের হবে? এ সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। এ সম্পর্কে ক্বোরআন ও হাদীছে কোনো স্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া যায় না। তবে এতটুকু স্পষ্ট যে, এটাকে আল্লাহ 0 ভূগর্ভ থেকে বের করবেন।
৪) দা-ব্বাতুল আরদ্ব’ সম্পর্কে বেশকিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, তন্মধ্যে যেমন-এটি সালিহ্ 5 এর উটনী বা সেই উটনীর বাচ্চা। কেউ কেউ মনে করেন যে এটি হলো কা‘বার দেয়ালে অবস্থানরত কোনো সাপ। আবার অনেকের মতে, এটি কোনো এক দ্বীপে তামিম আদ্ দ্বারীকে (3) দাজ্জালের খবর দেয়া সেই লোমশ প্রাণীটি। তবে এগুলোর কোনোটিরই বিশুদ্ধ ও সঠিক কোনো ভিত্তি নেই।
৫) দা-ব্বাতুল আরদ্ব’ বের হয়ে কি করবে?দা-ব্বাতুল আরদ্ব’ এর মূল কাজ হবে- এটি মানুষকে সিল মেরে দিবে। এটি মু’মিনদের কপালে ‘মু’মিন’ লিখে দিবে এবং কাফিরদের নাকের ডগায় ‘কাফির’ লিখে দিবে। এর দ্বারা কে মু’মিন আর কে কাফির তা চেনা যাবে। পরবর্তীতে এটি মানুষের সাথে মিশে যাবে।
৬) ক্বিয়ামাতের ‘আলামত সমূহ একটির পর একটি প্রকাশ পেতে থাকবে। ঠিক যেমন কোন মালার রশি ছিঁড়ে গেলে এর পুতিগুলো একটার পর একটা খসে পড়ে।
৭) ক্বিয়ামাতের ‘আলামতসমূহকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন-
ক) যেগুলো মু’মিন ও কাফির উভয়েই প্রত্যক্ষ করবে। পর্যায়ক্রমে সেগুলো হলো- ইমাম মাহদি (5) এর আগমন -> দাজ্জালের আবির্ভাব -> ‘ঈছা 5 এর আগমন -> ইয়া’জূজ মা’জূজের আত্মপ্রকাশ -> পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া -> দা-ব্বাতুল আরদ্ব এর আত্মপ্রকাশ -> এবং একটি ধোঁয়া নির্গত হওয়া।
খ) যেগুলো শুধুমাত্র কাফিররা প্রত্যক্ষ করবে। সেগুলো হলো-৩ টি বড় ধরনের ভূমিধ্বস -> ইয়েমেন থেকে আগুন বের হওয়া -> এবং সিঙ্গায় ফুঁৎকার।
৮) ‘ঈছা 5 এর অবস্থানকালীন সময়ে পৃথিবীতে অন্য কোনো ধর্মের চর্চা থাকবে না। শুধুমাত্র ইছলামের চর্চা বিদ্যমান থাকবে। তাঁর ইন্তিক্বালের পরে আবারো অন্যান্য ধর্মের চর্চা ফিরে আসতে থাকবে।
ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) ক্বিয়ামাতের বড় ‘আলামাতের সাথে সাথে ‘আলামাতুস্ সুগরা বা ছোট ছোট নিদর্শনও প্রকাশ পেতে পারে, এ কথার প্রমাণ কী?
২) যখন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে, তখন কি মুছলিমরা পৃথিবীতে জীবিত থাকবে?
৩) বাংলাদেশের কিছু ইছলামিক বক্তা দিনক্ষণ গননা করে বলে বেড়াচ্ছেন যে, ইমাম মাহদি কবে আসবেন। এমন লোকদের প্রতি আপনার নাসীহা কি? আর বাংলাদেশ তথা সমগ্র পৃথিবীর মুছলিম শ্রোতাদের প্রতি আপনার নাসীহা কি?
৪) কেউ যদি ব্যাংকে জব করে, তাহলে তার ইনকাম পরিবারের অন্যরা কতটুকু খেতে পারবেন? যদি পরিবারের অন্যদের কোনো আয়ের পথ না থাকে। এই ক্ষেত্রে বিধান কি?