এই অডিওটি হলো আশ্শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু সালিহ্ আল ‘উছাইমীন o কর্তৃক ব্যাখ্যাকৃত ইমাম ইবনু ক্বোদামাহ আল মাক্বদিছী o এর সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ “লুম‘আতুল ই‘তিক্বাদ” এর ধারাবাহিক অডিও ভাষান্তর। বাংলা ভাষায় অডিওরূপে এটি ভাষান্তর করেছেন উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c। এতে ছালাফে সালিহীনের (4) ‘আক্বীদাহ-বিশ্বাসের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। আহলুছ্ ছুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ‘উলামায়ে কিরামের চিরাচরিত স্বভাব–বৈশিষ্ট্যও হলো যে, তারা তাদের লিখনীর মাধ্যমে সর্বাগ্রে বিশুদ্ধ ইছলামী ‘আক্বীদাহ্র সংরক্ষণ এবং তা প্রচার ও প্রসার করে থাকেন। বক্তব্যের এ পর্বে উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c নিম্নোক্ত বিষয়ে আলোচনা করেছেন:-
১) ক্বোরআনে কারীমের বিবরণ বিষয়ে ধারাবাহিক আলোচনা।
২) যারা আল্লাহ্র কথা বা বাণীকে তাঁর “মনের ভাব বা অভিব্যক্তি” বলে দাবি করে, তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত।
৩) আল্লাহ 7 স্বীয় ইচ্ছানুযায়ী এবং স্বীয় পছন্দনুযায়ী শব্দে কথা বলেন।
৪) যারা আল্লাহ্র কালামকে তাঁর “মনের ভাব বা অভিব্যক্তি” বলে দাবি করে, তাদের ব্যাপারে ইমাম ইবনু হাজার আল ‘আছক্বালানীর বক্তব্য।
৫) যারা ক্বোরআনে কারীমকে সৃষ্ট বলে দাবি করে, তাদেরকে আমরা বলব- আল্লাহ্র (0) সুমহান গুণাবলী সমূহ আল্লাহ্র নাম সমূহেরই অন্তর্ভুক্ত।
যারা ক্বোরআনে কারীমকে সৃষ্ট বলে দাবি করে, উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে অত্যন্ত চমৎকারভাবে তাদের এই ভ্রান্ত দাবি খন্ডন করেছেন।
৬) ক্বোরআনে কারীমের ছূরা যুমারের ৬২নং আয়াত-
اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ.
অর্থাৎ- “আল্লাহ সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা”।
এই আয়াতের প্রকৃত ব্যাখ্যা উপস্থাপন এবং যারা এই আয়াতের অপব্যাখ্যা করে তাদের যথার্থ খন্ডন।
৭) ক্বোরআনে কারীমের ছূরা আন্নিছা-র ১৭১নং আয়াত-
وَكَلِمَتُهُ أَلْقَاهَا إِلَىٰ مَرْيَمَ وَرُوحٌ مِّنْهُ.
অর্থাৎ- “আল্লাহ্র কালিমাহ যা তিনি মারইয়ামের প্রতি সঞ্চারিত করেছিলেন এবং তাঁর আদিষ্ট আত্মা”।
এই আয়াতের প্রকৃত ব্যাখ্যা এবং যারা এই আয়াতের বানোয়াট ব্যাখ্যা করে তাদের যথাযথ খন্ডন।
৮) আল্লাহ্র (0) গুণাবলী ও এর তা-ওয়ীল প্রসঙ্গ:-
যারা আল্লাহ্র (7) গুণাবলীর তা-ওয়ীল করে থাকে তাদের দাবি হলো- তারা যদি আল্লাহ্র সিফাতের বাহ্যিক অর্থকে স্বীকার করে তাহলে তদ্বারা আল্লাহ্কে (8) সৃষ্টির সাথে তুলনা করা হবে। তাই তারা আল্লাহ্র (0) গুণাবলীর তা-ওয়ীল করে থাকে, সেগুলোকে তারা অস্বীকার করে না। উছতায তাদের এ ভ্রান্ত দাবির ব্যাখ্যা করেছেন এবং তা যথাযথভাবে খন্ডন করেছেন।
ক) আমরা (আহলুছ্ ছুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ) আল্লাহ্র (7) গুণাবলিকে সৃষ্টির সাথে তুলনা করি না। কেননা আল্লাহ্র অনুরূপ বা তাঁর সদৃশ কোন কিছু নেই। ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন:-
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ.سورة الشورى- ١١
অর্থাৎ- তাঁর মতো কোন বস্তু নেই।ছূরা আশ্শুরা- ১১
খ) আল্লাহ্র কোন সিফাতের বাহ্যিক অর্থকে নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো বাদ দেয়ার কোন অধিকার বা অনুমতি আমাদের নেই। আল্লাহ্র (7) কোন সিফাতের বাহ্যিক অর্থকে বাদ দিয়ে ভিন্ন অর্থ গ্রহণ করার জন্য চারটি শর্ত রয়েছে, এগুলো হলো-
ক) রূপক অর্থটি ‘আরাবী ভাষায় প্রচলিত ও ব্যবহৃত হতে হবে এবং ভাষাবিদদের কাছে অর্থটি গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
খ) শব্দের বাহ্যিক অর্থটি বাদ দিয়ে রূপক অর্থটি গ্রহণের পক্ষে আক্ষরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমাণ থাকতে হবে।
গ) রূপক অর্থটি গ্রহণের পথে কোনরূপ অন্তরায় থাকতে পারবে না। উদাহরণস্বরূপ- যখন কোন কৃষককে রূপক অর্থে কাফির বলা হবে (কাফির শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে) আর সে যদি নিজেকে মুছলিম বলে দাবি করা সত্ত্বেও শিরকে আকবার কিংবা স্পষ্ট কুফ্রের মধ্যে নিপতিত থাকে, তাহলে তার ক্ষেত্রে এই কাফির শব্দটি রূপক অর্থে গ্রহণ করা যাবে না বরং একে প্রকৃত বাহ্যিক অর্থেই গ্রহণ করতে হবে।
ঘ) শব্দটির উচ্চারণকারী যিনি হবেন তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেবেন যে, শব্দটির বাহ্যিক অর্থ তার উদ্দেশ্য নয় বরং এর দ্বারা তিনি অন্য একটি রূপক অর্থ বুঝিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ- কেউ একজন বলল যে, “বাংলাদেশের মানুষগুলো হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার” এই কথা দ্বারা বক্তা একথা বুঝাতে চান না যে, বাংলাদেশের মানুষগুলো জঙ্গলে বসবাস করে এবং তারা আক্ষরিক অর্থেই হিংস্র ব্যাঘ্র বা রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বরং এ কথা দ্বারা বক্তা এটাই বুঝাতে চান যে, বাংলাদেশের মানুষগুলো অনেক শক্তিশালী ও বীর সাহসী।