ড. আশ্‌ শাইখ সালিহ্‌ আল ফাওযান কর্তৃক ব্যাখ্যাকৃত ইমাম আল বারবাহারী রচিত “শারহুছ্ ছুন্নাহ (ছুন্নাতের ব্যাখ্যা)” (৪৫নং পর্ব)

এটি মুহ্তারাম আশ্‌শাইখ সালিহ্ আলফাওযান (c) কর্তৃক আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের প্রখ্যাত ইমাম- ইমাম আল বারবাহারী (o) এর অনবদ্য গ্রন্থ “শারহুছ্ ছুন্নাহ”এর অতি চমৎকার ও মূল্যবান ব্যাখ্যাগ্রন্থের অডিও ভাষান্তর। বাংলা ভাষায় গ্রন্থটি ধারাবাহিকভাবে অডিও ভাষান্তর করছেন উছতায আবূ ছা`আদা হাম্মাদ বিল্লাহ (c)। অদ্যকার আলোচনায় উছতায- মৃতরা জীবিতদের ‘আমলের দ্বারা উপকৃত হন কি-না? সে সম্পর্কে মূল্যবান আলোচনা করেছেন। এছাড়া তাতে আরো যেসব বিষয় সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার আলোচনা রয়েছে সেগুলো হলো নিম্নরূপ:-
১) মৃতরা জীবিতদের ‘আমালের দ্বারা উপকৃত হন কিনা? এটি একটি প্রচণ্ড বিরোধপূর্ণ মাছআলা। মতবিরোধ তৈরি হওয়ার মূল কারন হল, উভয়দিকেই ক্বোরআনের আয়াত ও হাদীছ রয়েছে। যেমন:

 ক) যারা বলেন যে মৃতরা জীবিতদের ‘আমালের দ্বারা উপকৃত হন না। তাদের দলীলগুলো নিম্নরুপঃ
ছূরা আন্‌ নাজ্‌ম এর ৩৯ নং আয়াতঃ وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰ – অর্থাৎঃ-মানুষ যা করবে, তাই সে পাবে।
আয়াত দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ভালো হোক বা মন্দ হোক মানুষ কেবল তার কৃতকর্মের ফলই ভোগ করবে, এর বাইরে সে কিছূ পাবে না।
ছূরা আলবাক্বরাহ এর ২৮৬ নং আয়াতেও অনুরূপ বর্ণনা পাওয়া যায়। আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেনঃ- لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ অর্থাৎঃ- সে ভালো যা করেছে তার ছাওয়াব পাবে। এবং নিজের মন্দ কৃতকর্মের জন্য সে নিজেই নিগ্রহ ভোগ করবে।
ছূরা ইয়া-ছীন এর র ৫৪ নং আয়াতেও অনুরূপ কথা রয়েছে। আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেনঃ- فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ – অর্থাৎঃ- কারো প্রতি কোনও যুল্‌ম করা হবেনা। তোমরা যে ‘আমাল করেছিলে তোমাদেরকে কেবল তারই প্রতিফল দেয়া হবে।
হাদীছেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। তবে হাদীছে মৃত্যুর পর উপকৃত হওয়ার তিনটি পথ খোলা আছে মর্মে বলা হয়েছে। সেগুলো হলঃ ১) ছাদাক্বয়ে জারিয়াহ ২) নেক সন্তান ৩) দ্বীনী জ্ঞান।
ছালাফদের মতে, এই তিনটি কাজও আসলে ব্যক্তির নিজেরই কর্ম।
খ) যারা বলেন যে মৃতরা জীবিতদের ‘আমলের দ্বারা উপকৃত হয়, তাদের দালীলগুলো নিম্নরূপঃ
ছূরা আলহাশ্‌র এর ১০ নং আয়াত, আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেনঃ- وَالَّذِينَ جَاءُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَان – অর্থাৎঃ- যারা অগ্রবর্তীদের পরে এসেছে তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আর আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করো ।
হাদীছে বর্ণিত রয়েছে, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেনঃ- অর্থঃ- কোনো ব্যাক্তির জানাযায় যদি এমন ৪০ জন ব্যাক্তি অংশগ্রহণ করেন, যারা কখনো আল্লাহ্‌ 0 এর সাথে শির্‌ক করেননি, তবে ওই লোকের জন্য আল্লাহ্‌ 0 তাদের সুপারিশ ক্বাবূল করবেন।
সাহীহ বুখারিতে বর্ণিত হাদীছে রয়েছে যে, একলোক রাছূলুল্লাহ-কে (1) বলল, আমার মা হঠৎ মারা গেছেন। উনি বেঁচে থাকলে হয়তো কিছু সাদাক্বাহ করতেন। এখন আমি তার পক্ষ থেকে সাদাক্বাহ করলে তা কি ক্বাবূল হবে? রাছূলুল্লাহ 1 বললেন, হ্যাঁ, আদায় হবে।
অপর আরেকটি হাদীছের বর্ণনা পাওয়া যায় যে, রাছূলুল্লাহ 1 জুহাইনা গোত্রের এক মহিলাকে তার মায়ের পক্ষ থেকে হাজ্ব সম্পাদন করে নিতে বলেছেন।
একবার রাছূলুল্লাহ1 এক ব্যাক্তিকে বলতে শুনলেনঃ “আমি শিবরামার পক্ষ থেকে হাজ্ব সম্পাদনের নিয়্যাত করছি”। রাছূলুল্লাহ 1 তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ শিবরামা কে? লোকটি বললঃ উনি আমার ভাই অথবা নিকটাত্মীয় (বর্ণনাকারীর কাছে বিষয়টি একটু অস্পষ্ট যে, তিনি “ভাই” বলেছেন না “নিকটাত্মীয়” বলেছেন)। রাছূলুল্লাহ 1 তাকে বললেনঃ তুমি কি তোমার নিজের হাজ্ব সম্পাদন করেছ? উনি বললেন, না। রাছূলুল্লাহ 1 তাকে বললেনঃ আগে তুমি তোমার নিজের হাজ্ব সম্পাদন করো।
খাছ‘আম গোত্রের একজন মহিলা রাছূলুল্লাহ-কে (1) বললেন, আমার পিতার উপরে এমন সময় হাজ্ব ফার্‌য হয়েছে যে, এখন আর তার বাহনে আরোহণ করার ক্ষমতা নেই। আমি কি তার পক্ষ থেকে হাজ্ব সম্পাদন করতে পারবো? 1 বললেন, হ্যাঁ।
অপর আরেকটি হাদীছের বর্ণনা মতে, একবার রাছূলুল্লাহ 1 খুব সুন্দর দু’টি ভেড়ি যবেহ করলেন। একটি নিজের ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে অপরটি তার উম্মাতের পক্ষ থেকে।
ছূরা আত্ব্‌তূর এর ২১ নং আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, সন্তান যদি তার পিতা-মাতার চেয়ে নিম্নস্তরের জান্নাতে থাকে, তবে আল্লাহ্‌ 7 তাকেও উচুস্তরের জান্নাতে নিয়ে যাবেন।
আবার, পিতা-মাতা যদি সন্তানের চেয়ে নিম্নস্তরের জান্নাতে থাকে, তবে আল্লাহ্‌ 7 তাদেরকেও উঁচুস্তরের জান্নাতে নিয়ে যাবেন।
এছাড়াও এসম্পর্কে আরও অনেক হাদীছ রয়েছে।

২) এখন এই মাছ’আলার কী সমাধান রয়েছে?
আমরা এই মাছ’আলাটাকে সমাধানের জন্য দু’ভাগে ভাগ করব।

ক) প্রথমটি হল, মায়্যিত মারা যাওয়ার আগে তার উপর এমন কোনও ওয়াজিব কাজ ছিল কি, যা সে পূর্ণ করতে পারেনি? জীবিতরা কি তার পক্ষ থেকে তা আদায় করতে পারবে?
এ বিষয়ে কথা হলো যে, যদি তার উপর ‘শারীরিক এবং আর্থিক কোন ‘ইবাদাত ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে জীবিতরা তার পক্ষ হতে তা আদা করতে পারবে। যেমন, হাজ্ব।
তদ্রুপ হলো রোযা। কোনও ব্যাক্তির যদি ছাফরের কারনে রোযা ক্বাযা হয়, এবং উনি মারা যাওয়ার আগে ক্বাযা আদায়ের জন্য যথেষ্ট সময় পান (কিন্তু তা আদা করতে পারেন নি), তবেই তা তার জন্য ওয়াজিব বলে গণ্য হবে। যা পরবর্তীতে জীবিতরা তার পক্ষ থেকে সম্পাদন করে নেবেন। (যদি কোন ব্যক্তি রোযার ‘ঈদের পরদিনই মৃত্যুবরণ করেন তবে তার পক্ষ হতে আর সেই রামাযানের রোযা ক্বাযা আদা করতে হবেনা। কারন তিনি নিজেই ক্বাযা আদায়ের যথেষ্ট সময় পাননি)।
সাধারনত মায়্যিতের উপর ওয়াজিব রোযা তার উত্তরাধিকারীগণ ভাগ করে নিয়ে আদায় করতে পারবেন। অন্য কেউ আদায় করলেও তা আদা হয়ে যাবে। তবে, মায়্যিতের উপর ওয়াজিব কাফ্‌ফারা আদায়ের ক্ষেত্রে ৬০টি রোযা একাধারে একজনকেই রাখতে হবে।
অনুরূপ মায়্যিতের পক্ষ হতে ঋণ পরিশোধ। মায়্যিতের ঋণ থাকলে যদি তা তার উত্তরাধিকারীগণ আদায় করে দেন, তবে তা আদায় হয়ে যাবে। তবে সালাতের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবেনা।
খ) দ্বিতীয়টি হল, এমন কোনও কাজ করা যদ্বারা মায়্যিতের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু, মায়্যিতের নামে যদি ছাওয়াব রেছানী(বকসানো) বা ইছালে ছাওয়াব করা হয় তবে এর দ্বারা মায়্যিত উপকৃত হবে কি?
এ বিষয়ে কথা হলো যে, হ্যাঁ, উপকৃত হতে পারে।সাহীহ বুখারিতে বর্ণিত সাদাক্বাহ্‌ সম্পর্কিত হাদীছটি এর প্রমাণ। এই ব্যাপারে দ্বিমত পোষণকারীরাও একমত যে, দু’আ, সাদাক্বাহ ও ক্বোরবানির দ্বারা মায়্যিত উপকৃত হতে পারেন।

৩) যারা দাবী করেন যে মৃতরা জীবিতদের ‘আমালের দ্বারা উপকৃত হয়ে থাকেন, তারা তাদের দাবীর বিপক্ষে যে সব দালীল রয়েছে সেগুলোর কি জাওয়াব দিয়ে থাকেন ?

তাদের ১ম জাওয়াব হলোঃ- অনেকের মতে, ছূরা আন্‌নাজ্‌ম এর ৩৯নং আয়াতে শুধুমাত্র কাফেরদের কথা বুঝানো হয়েছে।
কিন্তু, অপরপক্ষের মতে, এখানে الإِنسَانِ দ্বারা সমস্ত মানুষকেই বুঝানো হয়েছে।
২য় জাওয়াব হলোঃ-‘ইকরামাহ o এর মতে, ছূরা আন্‌নাজ্‌ম এর ৩৯নং আয়াতের হুক্মটি মুছা 5 এর উম্মাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই উম্মাতের জন্য নয়।
তবে তার এই মতটি গ্রহনযোগ্য নয়। কারন, যদিও আয়াতটি মুছা 5 এর প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছে। তবে, পূর্ববর্তীদের শারী‘য়াত বা বিধান্ও আমাদের শারি‘য়াত বলে গণ্য হবে যতক্ষণ না তা রহিত করা হবে।
৩য় জাওয়াব হলোঃ- অনেকের মতে, ছূরা আন্‌নাজ্‌ম এর আয়াতটি মানছূখ (রহিত) হয়ে গেছে।
এই মতটিও গ্রহনযোগ্য নয়। কারন, খবরের আয়াতগুলো সাধারণত মানছূখ হয় না। হুক্‌ম সম্বলিত আয়াত মানছূখ হয়ে থাকে।
৪র্থ জাওয়াব হলোঃ- ক্বোরতূবী o উল্লেখ করেছেন যে, ছূরা আন্‌নাজ্‌ম এর ৩৯নং আয়াতটি কেবলমাত্র মন্দ ‘আমালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এক্ষেত্রে দালীল হিসেবে তিনি একটি হাদীছ এনেছেন, আর তা হলোঃ- আবূ হুরাইরাহ 3 থেকে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন, আল্লাহ্‌ 0 (মালাইকাহদেরকে) বলেন, বান্দাহ যখন কোন খারাপ কাজ করতে চায় তখন তোমরা তা লিপিবদ্ধ করো না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা বাস্তবায়ন করে। আর যদি সে ভালো কাজের ইচ্ছা পোষণ করে, তবে তা লিখে ফেলো।
এ দালীলটিও খূব গ্রহণযোগ্য নয়। কারন, مَا سَعَىٰ- এর মধ্যে সবকিছু অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া এখানে এ হাদীছটিও প্রাসঙ্গিক নয়।
৫ম জাওয়াব হলোঃ- ছূরা আন্‌নাজম এর ৩৯নং আয়াতে বুঝানো হয়েছে যে, ব্যাক্তি যা করেছে তার মালিক সে নিজে। অন্য কেউ নয়। কিন্তু, এখানে এটা বলা হয়নি যে, অন্যের ‘আমালের দ্বারা সে উপকৃত হতে পারবেনা।
এই ৫ম জাওয়াবটিই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। জামহূর (অধিকাংশ) ‘উলামায়ে কিরামের অভিমত ও তাই।

৪) কারো কারো অভিমত হলো যে, মৃতরা জীবিতদের ‘আমালের দ্বারা উপকৃত হবেন, এটা শুধুমাত্র সন্তানদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
কিন্তু তাদের এ দাবী বা অভিমতটি সঠিক নয়। কেননা উপরে উল্লেখিত শিবরামাহ্র হাদীছটি তাদের এই দাবীর বিপরীত। এছাড়া, রাছূলুল্লাহ 1 কর্তৃক তাঁর ও তাঁর উম্মাতের পক্ষ হতে দু’টি ভেড়ি ক্বোরবানি করা সম্পর্কিত হাদীছটিও এই দাবীকে ভুল প্রমাণিত করে।
৫) মৃতরা কি জীবিতদের সকল ‘আমলের দ্বারাই উপকৃত হবে?
এক্ষেত্রে জাওয়াব হলোঃ- ছুন্নাহ সম্মত ‘আমলই গ্রহণযোগ্য হবে। যদি ছুন্নাহ সম্মত ‘আমাল না হয়, তবে সেই বিদ’আতি ‘আমালের দ্বারা মায়্যিতের উপকৃত হওয়া তো দূরে থাক, মায়্যিত শাস্তিও পেতে পারে।
কিন্তু ছূরা আন্‌নাজম রয়েছে যে, وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰ – অর্থঃ মানুষ যা করবে, তাই সে পাবে। এটি ‘আম বা সাধারণ। যে কোনরূপ ভালো ও মন্দ কাজ এর অন্তর্ভুক্ত।
এ বিষয়টি হাদীছ দ্বারা প্রমানিত। যেমন, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন, পরিবারবর্গ মৃতের জন্য ক্রন্দন করলে এর জন্য মৃত ব্যক্তির ‘আযাব হবে।
তবে এক্ষেত্রে কথা হলো যে, যে, মৃত ব্যক্তি যদি তার জীবিত থাকাকালে পরিবারকে এই ব্যাপারে নিষেধ করে না থাকে, তবেই তার উপরে শাস্তি প্রযোজ্য হবে। নিষেধ করে গেলে আর শাস্তি পাবেনা। তদ্রুপ অন্যান্য মন্দ কর্মের ক্ষেত্রেওভ
৬) ছাওয়াব রেছানীর সঠিক কাজ গুলো কি কি?
যেমন- ক) দু’আ করা। খ. মায়্যিতের নামে সাদাক্বায়ে যারিয়াহ করা। গ) জানাযার সালাত আদায় করা। ঘ. মায়্যিতের নামে ক্বোরবানি করা। ঙ. মায়্যিতের নামে হাজ্ব বা ‘উমরাহ করা।
‘উলামায়ে কিরাম আরও কিছু ‘আমালের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন-

  • নাফ্ল রোযা পালন করা।
  • ক্বোরআনে কারিমের তিলাওয়াত করা। তবে এ বিষয়টিতে মতবিরোধ আছে। কিন্তু মায়্যিতের নামে ক্বোরআনে কারীম তিলাওয়াতকারীকে বিদ’আতি বলা যাবেনা। তবে, অধিকাংশ ‘উলামায়ে কিরামের মতে, এই ‘আমাল না করাই উত্তম। কেননা ছালাফে সালিহীন এরূপ করেছেন বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।

 

ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) السلام عليكم।
রামাযান চলা অবস্থায় কোনও বোন যদি নিফাছ অবস্থায় থাকেন যদ্দরুণ তিনি সিয়াম পালন করতে পারেন নি, এমন করে যদি দুই রামাযানের সিয়াম জমা হয়ে যায় , তাহলে তার পক্ষ হতে এই সিয়ামগুলো কি অন্য কেউ রাখতে পারবে? বা, তার করনীয় কি? জাযা-কাল্লাহু খাইর।
২) শাইখ, কোন মৃত ব্যক্তির সন্তানরা যদি কোনও বদ ‘আমল করে বা বিদ’আতের সাথে যুক্ত থাকে, এবং সমাজে প্রচলিত জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী এমন বিষয়গুলো পালন করে তার জন্য কি মৃত ব্যক্তির শাস্তি হবে ?
আর যারা এরূপ বিদ‘আতি ‘আমাল করে থাকেন তাদের জন্য ইছলামী শারী‘য়াতে নির্দেশ কি? এবং এমন ‘আমালের শাস্তি কি?
৩) একজন মুমিন ব্যক্তি ইন্তেকাল করেছেন। এবং, উনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ৩ মেয়ে রেখে গেছেন। ছেলে ও মেয়ে ৪ জনই প্রাপ্ত বয়স্ক। উনি মারা যাওয়ার সময় বেশ কিছু সম্পদ রেখে গেছেন। উনি জীবিত অবস্থায়ই সব মেয়েদের বিয়ে দিয়ে গেছেন। ছেলের বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। শারী‘য়াতের দৃষ্টিতে এখন উনার পরিবারের অভিভাবক কে? উনার এই সম্পদের কি করা উচিত বা, বন্টন কি ভাবে করা উচিত? এখানে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী কি চাইলে জোর করে স্বামীর রেখে যাওয়া সকল সম্পদ ও পরিবারের দায়িত্ব আমৃত্যু নিজের কাছে রেখে দিতে পারবেন? উনার স্ত্রী কি চাইলে সম্পদের সমান ভাগ বা বেশী ভাগ মেয়েদের দিতে পারবেন? এই সম্পদের উপর উনার স্ত্রীর এখতিয়ার কতটুকু? ছেলের আর মেয়ের হাক্ব কতটুকু ?
৪) মৃত ব্যক্তির উপকারের জন্য কিছু করা আর জীবিত ব্যক্তির উপকারের জন্য কিছু করা. এদু‘য়ের মধ্যে কোনটা আল্লাহ্‌র কাছে বেশী প্রিয়?
রামাযান মাসে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে সাদাক্বাহ করা হলে তার ছাওয়াব কি জীবিত ব্যক্তির মতই বহুগুনে বৃদ্ধি পায়?


১. সাহীহ বুখারিতে বর্ণিত সাদাক্বাহ্‌ সম্পর্কিত হাদীছটি এর প্রমাণ। 

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close