এটি মুহ্তারাম আশ্শাইখ সালিহ্ আলফাওযান c কর্তৃক আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের প্রখ্যাত ইমাম- ইমাম আল বারবাহারী o এর অনবদ্য গ্রন্থ “শারহুছ্ ছুন্নাহ” এর অতি চমৎকার ও মূল্যবান ব্যাখ্যাগ্রন্থের অডিও ভাষান্তর। এতে ইছলামের মৌলিক বিষয়াদী, সঠিক ইছলামী ‘আক্বীদাহ ও মানহাজ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় গ্রন্থটি ধারাবাহিকভাবে অডিও ভাষান্তর করছেন উছতায আবূ ছা‘আদা হাম্মাদ বিল্লাহ c। এই পর্বে নিম্নোক্ত বিষয়াদী সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার আলোচনা করা হয়েছে:-
১) ইমাম বারবাহারী o বলেছেন- “আল্লাহ 0 আপনাকে রাহ্ম করুন! দ্বীনী বিষয়ে আপনার সমসাময়িক কারো থেকে কোন কথা শুনলে সেটাকে গ্রহণ বা বর্জন করার আগে কিংবা কারো আহবানে সাড়া দেয়ার আগে ভালো করে যাচাই-বাছাই করে নিন। সে বিষয়ে প্রকৃত আহলে ‘ইল্মদের জিজ্ঞেস করে নিন। জেনে নিন সাহাবায়ে কিরামের (4) কিংবা প্রকৃত ‘উলামায়ে কিরামের মধ্য হতে কেউ কি সে কথাটি কিংবা সে বিষয়ে বলেছেন। যদি তাদের থেকে সেই কথা বা বিষয়টি প্রমাণিত থাকে তাহলে কোনভাবেই সেটিকে পিছনে ফেলে দেবেন না বরং একে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করুন এবং এই কথা বা বিষয়টির উপরে অন্য কিছুকে প্রাধান্য দেবেন না নতুবা জাহান্নামে নিপতিত হতে হবে”।
২) উছতায হাম্মাদ c বলেছেন যে, কারো বক্তৃতা শুনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি শ্রোতাদেরকে জ্ঞান অর্জনের জন্য যে কোন বক্তা সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে তার বক্তৃতা শুনতে যেতে নিষেধ করেছেন।
৩) খাওয়ারিজদের বিকাশ ও তাদের কর্মকান্ডের কিছু নমুনা।
৪) রাফিযীদের কর্মকান্ড ও তার নেতিবাচক প্রভাবের নমুনা।
৫) দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে অনেক ভ্রান্ত-বিচ্যুত দল রয়েছে যেমন- তাবলীগ জামা‘আত, হিযবুত্ তাহ্রীর প্রভৃতি। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সাধারণ অনেক মুছলমান এসব সত্য-বিচ্যুত দলের ফাঁদে পড়ছেন।
৬) বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ইছলামের নামে পথভ্রষ্টকারী অনেক ভুয়া দা‘য়ী বা আহবানকারী, যারা মানুষকে ভ্রষ্টতা ও ফিতনার দিকে আহবান করে থাকে। এই সব অজ্ঞ-মূর্খ দা‘য়ী যদিও নিজেদেরকে আহলুছ্ ছুন্নাহ বলে দাবি করে থাকে, কিন্তু প্রকৃত অর্থে তারা হলো আহলুল বিদ‘আহ।
৭) মানুষকে সত্যবিচ্যুত করার জন্য এসকল বিভ্রান্তকারী দা‘য়ীদের বক্তব্যে রয়েছে সম্মোহনী ক্ষমতা, যেমনটি রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন। অতএব এ বিষয়ে অবশ্যই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:-
ক) ইমাম যখন জুমু‘আর খুতবা দেন ,তখন ইমামের খুতবা শুনার ব্যাপারে আমাদের মানহাজ (নীতি) কি হবে? বিশেষ করে ইমামের ‘আক্বিদাহ, মানহাজ সম্পর্কে যদি জানা না থাকে?
খ) সমসাময়িক কোনো বক্তা যদি বর্তমান সময়ের হাক্ব্যানী প্রবীণ ‘আলিমদের কাছে পরিচিত না হয় এবং বক্তৃতায় তাদের কোনো উক্তিও ব্যবহার না করে, কিন্তু ক্বোরআন, ছুন্নাহ ও পূর্ববর্তী ‘আলিমদের কথা বলে, তাহলে এমন বক্তার কথা কি নির্ভরযোগ্য হবে? এখানে এই বক্তার জন্য কি বর্তমান সময়ের প্রবীণ ও জীবিত ‘আলিমদের সাথে যোগাযোগ / পরিচিতি থাকা অথবা তাদের থেকে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে ‘ইলম অর্জন করা পূর্বশর্ত?
গ) যে ব্যক্তি ইছলামের চর্চা ও অনুসরণে নতুন অনুপ্রবেশ করেছে, ক্বোরআন ও ছুন্নাহ বুঝার জ্ঞান যার খুবই স্বল্প, সে দ্বীনী দা‘ওয়াতের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি বা দলের উৎস, প্রদত্ত তথ্য, বৃত্তান্ত ও শিক্ষাগত যোগ্যতা কিভাবে যাচাই-বাছাই করবে? এছাড়া সাধারণতঃ যাদেরকে দা‘ওয়াত দেয়া হয় তারা যেহেতু ক্বোরআন ও হাদীছের অর্থ ও বিষয়বস্তু বুঝার ক্ষমতা রাখে না কিংবা যারা ‘আক্বীদাহ ও তাওহীদ বিষয়ে লেখকদের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণে অক্ষম, তারা কি করে এসব বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করবে?
ঘ) السلام عليكم و رحمة الله و بركاته। জিম্বাবুয়ের অধিবাসী মুফতি ইছমা‘ঈল ইবনু মূছা ম্যাংক; যিনি ফেইসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয় একজন বক্তা, তিনি ইছলামের প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করেছেন স্বীয় পিতা মূছা ম্যাংক থেকে, আর মাদীনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেছেন, অতঃপর দেওবন্দ মাদরাছা থেকে ফিক্বহ বিষয়ে পড়াশুনা করে মুফতী উপাধি লাভ করেছেন, বর্তমানে তিনি মুফতি ম্যাংক নামেই বিখ্যাত। ইদানিং কিছু মুছলিম যুবা ভাই-বোনেরা তার কাছ থেকে ইছলামের জ্ঞান অর্জন করছেন এই বলে যে, “যদিও তিনি দেওবন্দ মাদরাছায় পড়ালেখা করেছেন তবুও আমরা তার কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারবো কারণ তিনি মাদীনা বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশুনা করেছেন এবং তিনি সত্য-সঠিক কথাবার্তা বলছেন, আর যদি তার মধ্যে ভুল-ভ্রান্তি থেকেও থাকে তাহলেও কোন অসুবিধা নেই, কারণ আমরা তার থেকে ভালো ও সঠিকটা গ্রহণ করবো এবং তার মন্দ ও ভুল-ভ্রান্তিগুলোকে বর্জন করবো”। শাইখ! এই লোকটি সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? এবং তার থেকে ‘ইল্ম নেয়া কতটুকু নিরাপদ? بارك الله فيكم!