এই অডিওটি হলো শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ‘উমার বাযমূল c প্রদত্ত “ছালাফে সালিহীনের অনুসৃত নীতির উপর অটল ও অবিচল থাকা” বিষয়ে প্রদত্ত একটি মূল্যবান ‘আরাবী ভাষণের বাংলা ভাষান্তর। ভাষান্তর করেছেন উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c। বক্তব্যে উল্লেখিত মূল বিষয়গুলো:-
১) পূর্ববর্তী ক্লাসের সংক্ষিপ্ত পূণঃআলোচনা।
২)
بَدَأَ الإِسْلاَمُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ كَمَا بَدَأَ
(অর্থ- ইছলাম অপরিচিতের ন্যায় আত্মপ্রকাশ করেছে এবং অচিরেই সেই অবস্থায় ফিরে যাবে—–) হাদীছটির ব্যাখ্যা।
তবে ইছলাম সবসময় পৃথিবীর সর্বত্র এই অবস্থায় থাকবে না। উছতায বিষয়টির বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
৩) মুছলমানরা যখন প্রকৃত ইছলাম থেকে দূরে সরে যাবে তখনই ইছলাম সমাজে অজানা-অপরিচিতের ন্যায় হয়ে পড়বে। এখানে শাইখ ক্বোরআনে কারীমের ছূরা আল মা-ইদাহ্র ৫৪নং আয়াত অবলম্বনে “ইরতিদাদ” এবং “মুরতাদ্দ” শব্দদ্বয় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
৪)
بَدَأَ الإِسْلاَمُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ كَمَا بَدَأَ
অর্থ- ইছলাম অপরিচিতের ন্যায় আত্মপ্রকাশ করেছে এবং অচিরেই সেই অবস্থায় ফিরে যাবে—-।সাহীহ্ মুছলিম, ইবনু মাজাহ
এই হাদীছটি রাছূলুল্লাহ 1 থেকে বিশুদ্ধভাবে বর্ণিত।
৫) মুছলমানরা সংখ্যায় অনেক, এতদসত্ত্বেও সমাজে ইছলাম কিভাবে অদ্ভূত ও অপরিচিতের ন্যায় হবে? উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে যেয়ে ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ o এর এই কথাটি তুলে ধরেছেন যে, “ইছলাম অমুছলিমদের কাছে অদ্ভূত-অপরিচিত বিষয় হবে না বরং তা মুছলমানদের কাছেই অদ্ভূত-অপরিচিত বিষয় হয়ে পড়বে”। বাস্তবতাও হলো তা-ই। প্রকৃত ছুন্নাহ এবং ছুন্নাতের প্রকৃত অনুসারীরা বর্তমান সমাজের অন্যান্য মুছলমান নামধারীদের কাছে অদ্ভূত-অপরিচিতের ন্যায় হয়ে গেছেন। মুছলমানরা আজ ছুন্নাতকে বিদ‘আত আর বিদ‘আতকে ছুন্নাত বলে পালন করছে। উদাহরণস্বরূপ- শবে-বরাত পালন একটি বিদ‘আত, কিন্তু তথাকথিত অনেক ‘আলিম ও মৌলভীরা অনেক ক্ষেত্রে জেনে-শুনেও কেবল নিজেদের জাগতিক স্বার্থসিদ্ধির নিমিত্ত শবে-বরাত উদযাপনসহ আরো অসংখ্য বিদ‘আতকে সাধারণ জনগণের নিকট ছুন্নাত বলে প্রচার করছে এবং জনসাধারণকে পথভ্রষ্ট করছে।
৬) ইদানিং নাস্তিকতা ও ইছলাম ত্যাগের প্রবণতা বেশ বেড়ে গেছে। মুছলমান নামধারী এমন অনেক লোকের দেখা মিলে যারা কেবল নামেমাত্র মুছলমান, যাদের মধ্যে ইছলামী তথা সঠিক তাওহীদী ‘আক্বীদাহ-বিশ্বাসের বালাই নেই। তবে এ অবস্থা দেখে আমাদের ভয় পাওয়ার কিংবা নিরাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। কেননা ক্বোরআনে কারীমে ছূরা আল মা-য়িদাহ্ এর ৫৪নং আয়াতে আল্লাহ 7 অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন:-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
অর্থাৎ- হে মূমিনগণ! তোমাদের মধ্য হতে যে ব্যক্তি স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরেই আল্লাহ (তাদের স্থলে) এমন এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসবেন এবং তারাও আল্লাহ্কে ভালবাসবেন, তারা মু’মিনদের প্রতি হবেন বিনয়ী এবং কাফিরদের প্রতি হবেন কঠোর, তারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করবেন, তারা কোন ন্ন্দিুকের নিন্দাকে ভয় পাবে না, এটি আল্লাহ্র অনুগ্রহ- তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন, আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী।ছূরা আল মা-য়িদাহ- ৫৪
৭) বাংলাদেশে অনেক অমুছলিম এন.জি.ও (দেশী-বিদেশী বেসরকারী সাহায্য সংস্থা) বিভিন্নভাবে মুছলমানদেরকে ইছলাম থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য দিবারাত্র কাজ করে যাচ্ছে এবং প্রতি বছর তারা বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুছলমানদের ধর্মত্যাগী করছে। যদিও এ বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক তবুও তাতে আমাদের ভয় পাওয়ার বা হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কেননা আমরা দেখছি, যারা ইছলাম ত্যাগ করছে তাদের প্রায় সকলেই হলো অজ্ঞ-অশিক্ষিত লোক। ইছলাম ত্যাগের পর তারা যাবতীয় বাজে কাজে জড়িয়ে পড়ছে। পক্ষান্তরে আল্লাহ্র (0) অশেষ রাহ্মাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব লোকেরা ইছলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন, তারা প্রায় সকলেই হলেন উচ্চ শিক্ষিত, জ্ঞানী-গুণী লোক। এসব নও-মুছলিমরা যথাযথভাবে ক্বোরআন ও ছুন্নাহ অনুসরণ করে চলছেন। তারা আল্লাহ্কে ভালোবাসেন, আল্লাহও তাদেরকে ভালোবাসেন।