উছতায আবূ ছা‘আদাহ হাম্মাদ বিল্লাহ c ধারাবাহিক এই অডিও বক্তব্যে নারীদের সম-সাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং এসকল সমস্যা থেকে উত্তোরণের পথ ও পদ্ধতি বিষয়ে ক্বোরআন-ছুন্নাহ্র আলোকে অত্যন্ত মূল্যবান আলোচনা পেশ করেছেন।পারিবারিক এবং বৈবাহিক জীবনে নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হওয়া, সন্তানদের লালন-পালন করা, সুখী ও সমৃদ্ধ পরিবার গড়ে তোলা, ঘরের বাইরে কাজ-কর্ম করা ইত্যাদি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হয়েছে। এই পর্বে উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c পুরুষদের জন্য একের অধিক বিয়ে প্রসংঙ্গে যেসব বিষয় আলোচনা করেন, তন্মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়। নিম্নে উল্লেখ করা হলো:-
১) একাধিক বিয়ের বিষয়টি ক্বোরআন, ছুন্নাহ ও ছালাফে সালিহীনের (g)‘আমাল দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমানিত।
ক) ক্বোরআনে কারীমে ছূরা আন্নিছার ৩নং আয়াতে আল্লাহ্ 0 একাধিক বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন।
খ) রাছূলুল্লাহ 1 নিজেও একাধিক বিয়ে করেছেন।
গ) আমাদের ছালাফগণও এর উপর ‘আমাল করেছেন।
২) বর্তমান সমাজের কিছু মানুষ ও আহলে কিতাবগণ এর বিরোধিতা করলেও তাদের কিতাবেই এর প্রমাণ রয়েছে। যেমন, দাঊদ (5) এর ১০০ জন স্ত্রী এবং ছুলাইমান (5) এর ৯০ জন স্ত্রী ছিল।
৩) ২য়, ৩য় বা ৪র্থ বিয়ে করার সময় পূর্বের স্ত্রী বা স্ত্রীদের আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে কি?
ক) তাদের আপত্তি সাধারণত গ্রহণযোগ্য নয়।
খ) ক্বোরআনে কারীমের ছূরা আন্নিছা ও ছূরা আন্নূরের আয়াতে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেওয়া হলেও তাতে (পূর্বের স্ত্রী বা স্ত্রীদের অনুমতি নিতে হবে) এরকম কোন শর্ত দেয়া হয়নি।
গ) এটি রাছূলুল্লাহ 1 এর একটি ছুন্নাহও বটে।
৪) রাছূলুল্লাহ 1 যুবকদেরকে সামর্থ্য রাখলে বিয়ে করে নিতে বলেছেন।
ক) একজন পুরুষ, একটি বিয়ের দ্বারা তার চাহিদা পূরণ না হলে সে অবশ্যই আরও বিয়ে করতে পারবে। তবে, ক্বোরআনে কারীমের ছূরা আন্নিছার ৩নং আয়াতে বলা হয়েছে- যদি কেউ একাধিক স্ত্রীর মাঝে সমতা বিধান করতে না পারে তাহলে সে যেন একজনকেই বিয়ে করে।
খ) উপরোক্ত ব্যাপারটির ব্যাখ্যা ছূরা আন্নিছার-ই অপর আরেকটি আয়াতে আল্লাহ 0 দিয়ে দিয়েছেন। উক্ত আয়াতে অন্য স্ত্রীদের তুলনায় ইচ্ছাপূর্বক একজনের প্রতি বেশি ঝুকে পড়তে নিষেধ করা হয়েছে।
৫) একাধিক বিয়েতে স্বামী স্ত্রী উভয়ের জন্যই কল্যাণ রয়েছে। উক্ত আলোচনায় শাইখ উভয়ের কল্যাণকর দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন।
৬) স্বামীর সকল স্ত্রীরা অবশ্যই একে অপরের বোন। তারা একে অপরের প্রতিদ্বন্ধি নয়।
ক) এক্ষেত্রে কিছুটা স্বভাবজাত ঈর্ষা থাকতেই পারে। যা উম্মাহাতুল মুমিনীনের (4) মাঝেও ছিল। এতদসত্ত্বেও তারা একে অপরকে নিজের বোনের মতই মনে করতেন।
খ) যেমন, যাইনাব বিনতে জাহ্শ (f) ছিলেন খুবই সুন্দরী নারী। তা নিয়ে তিনি কিছুটা গর্ববোধ করতেন। আর এ নিয়ে ‘আয়িশাহ (f) এর সাথে তাঁর একটু মনমালিন্য হত। কিন্তু সর্বোপরি যেহেতু তারা ছিলেন অত্যন্ত দ্বীনদার মহিয়ষী নারী, রাছূলুল্লাহ 1 স্ত্রী । তাই, দিনশেষে তারা একে অপরের প্রশংসাই করতেন করতেন।
৭) পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো একজন দ্বীনদার নারী। এখন চারজন স্ত্রীই যদি দ্বীনদার হয় তবে একজন পুরুষ চারটি শ্রেষ্ঠ সম্পদ লাভ করল।
ক) তাই বিয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই দ্বীনদার নারীকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবেই চারজন স্ত্রী থাকলেও কোনো সমস্যা হবেনা।
খ) নতুবা একটি সংসারকে ধ্বংস করার জন্য একজন দাজ্জাল স্ত্রীই যথেষ্ট।
৮) হাদিছের ভাষ্য অনুযায়ী, ক্বিয়ামাতের পূর্বে নারীদের আধিক্য হবে। এমনকি ৫০ জন নারীর বিপরীতে মাত্র ১ জন পুরুষ থাকবে। যার কিছুটা ‘আলামত আমরা এখনই দেখতে পাচ্ছি।
৯) ২য়, ৩য় বা ৪র্থ স্ত্রীকে বিবাহের পূর্বে একথা বলা যে, আমি আমার অন্যান্য স্ত্রীদের সমপরিমাণ সময় ও ভরণপোষণ তোমাকে দিতে পারবনা, এরকম বলা কি জায়েয?
ক) স্ত্রী রাজি থাকলে এটি জায়েয। যেমন, ছাওদাহ (f) তার জন্য নির্ধারিত সময়টুকু ‘আয়িশাহ্কে (f) দিয়ে দিয়েছিলেন।
১০) কোন কারন ছাড়াই একজন পুরুষ একের অধিক বিয়ে করতে পারবে। ছূরা আন্নিছার ৩নং আয়াত দ্বারা তাই প্রমানিত হয়।
ক) তবে এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য সৎ হতে হবে। আর আমাদের মূল উদ্দেশ্যই হল আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করা।
ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) একজন বোন ওনার টিনএজ লাইফে একজন ভাইয়ের সাথে রিলেশনশিপ করেছিলেন, এমন কি ওনার নিজের প্রতি যুলুমও করেছেন, প্রশ্ন হচ্ছে- এখন ঐ বোন যাকে বিয়ে করবেন তাকে কি জানাতে হবে যে, তিনি নিজের প্রতি যুল্ম করেছেন? এই বোন এখন ছালাফি ‘আক্বীদাহ ও মানহাজ অনুসরণ করে চলতে সচেষ্ট রয়েছেন। উনি কি বিয়ের জন্য একজন ছালাফি ভাইকে খুজবেন ?
২) বাবা মায়ের সম্পদ যদি সুদ- ঘুষ মিশ্রিত হয়, তাহলে সন্তানদের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে ঐসব সম্পদ থেকে খাওয়া এবং তাদের তাদের মৃত্যুর পরে ঐ সম্পদ ভোগ করা কি তাদের জন্য জায়েয? আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।