পাঁচ ওয়াক্ব্তের ফার্য সালাত জামা‘আতে আদায় করা ওয়াজিব। এর প্রমাণ হলো- রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ، فَيُحْطَبَ، ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ، فَيُؤَذَّنَ لَهَا، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ.رواه البخاري
অর্থ- যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি, আমার ইচ্ছে হয় যে, আমি জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দিব, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করা হবে, তারপর আমি সালাতের নির্দেশ দিব, সালাতের জন্য আযান দেয়া হবে, অতঃপর আমি কাউকে নামায পড়ানোর (সালাতে ইমামতি করার) নির্দেশ দিব, সে নামাযে ইমামতি করবে। ওদিকে আমি সেই সব লোকদের (যারা মাছজিদে জামা‘আতে শরীক হয়নি) বাড়িতে গিয়ে তাদের সহ তাদের ঘর-বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দিব।সাহীহ্ বুখারী
জামা‘আতে সালাত আদায় করা কতটুকু আবশ্যকীয় ও গুরুত্বপূর্ণ, নিম্নোক্ত হাদীছ সমূহেও এর সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে:-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ أَعْمَى، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّهُ لَيْسَ لِي قَائِدٌ يَقُودُنِي إِلَى الْمَسْجِدِ، فَسَأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُرَخِّصَ لَهُ، فَيُصَلِّيَ فِي بَيْتِهِ، فَرَخَّصَ لَهُ، فَلَمَّا وَلَّى، دَعَاهُ، فَقَالَ: هَلْ تَسْمَعُ النِّدَاءَ بِالصَّلَاةِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: فَأَجِبْ.رواه مسلم
অর্থ- আবূ হরাইরাহ e থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন- একদা এক অন্ধ লোক রাছূলকে (1) এসে বললেন- “হে আল্লাহর রাছূল! আমাকে মাছজিদে নিয়ে যাওয়ার মতো কোন লোক নেই। একথা বলে তিনি নিজ গৃহে নামায আদায়ের জন্য রাছূলুল্লাহ 1 এর নিকট অনুমতি চাইলেন। রাছূলুল্লাহ 1 তাকে অনুমতি দিলেন। তারপর যখন তিনি চলে যাচ্ছিলেন তখন তাকে ডেকে এনে বললেন:- তুমি কি নামাযের আযান শুনতে পাও? তিনি বললেন- জি হ্যাঁ। রাছূলুল্লাহ 1 তাকে বললেন:- তাহলে তুমি সাড়া দিবে (অর্থাৎ মাছজিদে জামা‘আতে উপস্থিত হবে)।সাহীহ্ মুছলিম
‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাছ‘ঊদ e থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন-
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَلْقَى اللهَ غَدًا مُسْلِمًا، فَلْيُحَافِظْ عَلَى هَؤُلَاءِ الصَّلَوَاتِ حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ، فَإِنَّ اللهَ شَرَعَ لِنَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّهُنَّ مَنْ سُنَنَ الْهُدَى، وَلَوْ أَنَّكُمْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ كَمَا يُصَلِّي هَذَا الْمُتَخَلِّفُ فِي بَيْتِهِ، لَتَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ، وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ لَضَلَلْتُمْ، وَمَا مِنْ رَجُلٍ يَتَطَهَّرُ فَيُحْسِنُ الطُّهُورَ، ثُمَّ يَعْمِدُ إِلَى مَسْجِدٍ مِنْ هَذِهِ الْمَسَاجِدِ، إِلَّا كَتَبَ اللهُ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ يَخْطُوهَا حَسَنَةً، وَيَرْفَعُهُ بِهَا دَرَجَةً، وَيَحُطُّ عَنْهُ بِهَا سَيِّئَةً، وَلَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنْهَا إِلَّا مُنَافِقٌ مَعْلُومُ النِّفَاقِ، وَلَقَدْ كَانَ الرَّجُلُ يُؤْتَى بِهِ يُهَادَى بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ حَتَّى يُقَامَ فِي الصَّفِّ.رواه مسلم
অর্থ- যে ব্যক্তি পরকালে আল্লাহ্র সাথে মুছলমান হিসেবে সাক্ষাৎ করতে আনন্দবোধ করে, সে যেন যেখানে তার জন্য আযান দেয়া হবে সেখানে এই পাঁচ ওয়াক্ব্ত নামাযের সূরক্ষা করে (মাছজিদে জামা‘আতে সালাত আদা করে)। আল্লাহ 0 তোমাদের নাবীর (1) জন্য সঠিক পথ প্রবর্তন করে দিয়েছেন। আর এই পাঁচ ওয়াক্ব্ত নামায হলো, সেই সঠিক পথের অন্তর্ভুক্ত। যদি তোমরা নিজ নিজ ঘরে নামায আদায় কর, যেমন এই পশ্চাদপদ ব্যক্তি (জামা‘আত হতে পিছিয়ে থাকা লোক) নিজ ঘরে নামায আদায় করে, তাহলে তোমরা তোমাদের নাবীর (1) ছুন্নাত পরিত্যাগ করলে। আর যদি তোমরা তোমাদের নাবীর (1) ছুন্নাত পরিত্যাগ কর, তাহলে অবশ্যই তোমরা পথভ্রষ্ট হবে। কেউ যদি খুব সুন্দর ও উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, অতঃপর (জামা‘আতে সালাত আদায়ের জন্য) যে কোন একটি মাছজিদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়, তাহলে মাছজিদে যেতে যতটি পদক্ষেপ সে ফেলবে, ততটি পদক্ষেপের বদলে আল্লাহ 8 তার জন্য একটি করে নেকী (কল্যাণ) লিখে দিবেন, প্রতিটি পদক্ষেপে একটি করে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং একটি করে তার পাপ মুছে দেবেন। আমরা আমাদের যুগে দেখেছি- প্রকাশ্য মুনাফিক্ব ব্যতীত কেউ জামা‘আত ত্যাগ করত না। এমনকি (রাছূল 1 এর যামানায়) দেখা যেত যে, দু‘জন লোকের কাধে ভর করে নিয়ে এসে একজন লোককে জামা‘আতের কাতারে দাঁড় করিয়ে দেয়া হতো।সাহীহ্ মুছলিম
সূত্র:-
(১) শাইখুল ইছলাম মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দিল ওয়াহ্হাব o সংকলিত “মাতনু শুরুতিস্ সালাত ওয়া আরকানিহা ওয়া ওয়াজিবা-তিহা”।
(২) “ফিক্বহুছ্ ছুন্নাহ” লি আছ্ছায়্যিদ আছ্ ছাবিক্ব o।
(৩) “আল ফিক্বহু ‘আলাল মাযাহিবিল আরবা‘আ” লিশ শাইখ ‘আব্দির্ রাহ্মান আল জাযীরী o।
(৪) ‘আল্লামা আশ্ শাইখ ইবনু বায o সংকলিত “কাইফিয়াতু সালাতিন্ নাবী 1” ।
(৫) ‘আল্লামা নাসিরুদ্দ্বীন আল আলবানী o সংকলিত “সিফাতু সালাতিন্ নাবী 1”।
(৬) আশ্শাইখ আল ‘আল্লামা আমান আল জামী o সংকলিত “শারহু মাতনি শুরুতিস্ সালাত ওয়া আরকানিহা ওয়া ওয়াজিবাতিহা”।
(৭) ‘আল্লামা আশ্শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু সালিহ্ আল ‘উছামীন o রচিত ও সংকলিত “ফিক্বহুল ‘ইবাদাত”।
(৮) ‘আল্লামা আশ্শাইখ সালিহ্ আল ফাওযান c সংকলিত “আল মুলাখ্খাসুল ফিক্বহী”
(৯) ‘আল্লামা আশ্শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু জামীল যাইনূ o সংকলিত “আরকানুল ইছলাম ওয়াল ঈমান”।