সালাত সঠিক হওয়ার জন্য শর্ত কয়টি ও কি কি?

সালাত সঠিক হওয়ার জন্য সালাত পূর্ববর্তী তথা সালাতের বাইরে ৬টি শর্ত রয়েছে। এগুলো যথাযথভাবে পূরণ না করলে নামায সঠিক হবে না, এমনকি এই শর্তগুলোর মধ্য হতে একটি শর্তও যদি না পাওয়া যায়, তাহলে সালাত বাত্বিল বলে গণ্য হবে।

শর্তগুলো হলো যথা:-

(এক) সালাতের সময় হয়েছে বলে অবগত হওয়া। কেননা সালাত হলো এমন একটি ফার্‌য কর্ম যা সময়ের সাথে সম্পর্কিত এবং সময় নির্ভর।

সালাতের মধ্যে ওয়াজিব হলো সাতটি

সালাতের মধ্যে ওয়াজিব হলো সাতটি। এসব ওয়াজিবের মধ্যে যে কোন একটি কেউ যদি ইচ্ছা পূর্বক ছেড়ে দেয় তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে এবং পুনরায় নতুন করে ঐ সালাত আদা করতে হবে। আর যদি ভুল বশতঃ নামাযের কোন ওয়াজিব বাদ পড়ে যায়, তাহলে “ছাহু ছাজদাহ” করে নিলে সেই নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে।
(এক) তাকবীরে তাহ্‌রীমাহ ব্যতীত নামাযের অন্যান্য তাকবীর সমূহ। কেননা রাছূল তা কখনো পরিত্যাগ করেননি।

(দুই) রুকূ‘ হতে উঠার সময় ইমাম ও মুনফারিদের (একাকী নামায আদায়কারীর) “سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ” (ছামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ) বলা। এর প্রমাণ হলো:- আবূ হুরায়রাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিত-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ حِينَ يَرْفَعُ صُلْبَهُ مِنَ الرُّكُوعِ. (رواه مسلم)

পাঁচ ওয়াক্ব্‌তের ফার্‌য সালাত জামা‘আতে আদায় করা ওয়াজিব

পাঁচ ওয়াক্ব্‌তের ফার্‌য সালাত জামা‘আতে আদায় করা ওয়াজিব। এর প্রমাণ হলো- রাছূলুল্লাহ صلى الله عليه وسلم বলেছেন:-

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ، فَيُحْطَبَ، ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ، فَيُؤَذَّنَ لَهَا، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ. (رواه البخاري)

অর্থ- যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি, আমার ইচ্ছে হয় যে, আমি জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দিব, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করা হবে, তারপর আমি সালাতের নির্দেশ দিব, সালাতের জন্য আযান দেয়া হবে, অতঃপর আমি কাউকে নামায পড়ানোর (সালাতে ইমামতি করার) নির্দেশ দিব, সে নামাযে ইমামতি করবে। ওদিকে আমি সেই সব লোকদের (যারা মাছজিদে জামা‘আতে শরীক হয়নি) বাড়িতে গিয়ে তাদের সহ তাদের ঘর-বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দিব। (সাহীহ্‌ বুখারী)

তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ বা তাওহীদুল ‘ইবাদাহ বলতে কি বুঝায়? 

তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ বা তাওহীদুল ‘ইবাদাহ হলো:- আল্লাহ سبحانه وتعالى মানব জাতিকে যে কাজের জন্য; যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, সেই কাজে তথা ‘ইবাদাতে আল্লাহ্‌র এককত্ব অক্ষুন্ন রাখা এবং ‘ইবাদাতে আল্লাহ্‌কে একক ও অদ্বিতীয় প্রমাণিত করা। মোটকথা, সকল প্রকার ‘ইবাদাত এক আল্লাহ্‌র জন্য নিবেদিত করা। তিনি ব্যতীত তাঁর সৃষ্টি; আর কাউকে আহবান না

জুমু‘আর সালাত কার উপর ফার্‌য?

স্বাধীন, প্রাপ্ত বয়স্ক, বিবেকবান, নিজ এলাকায় অবস্থানরত (মুক্বীম), জুমু‘আর সালাতে উপস্থিত হতে সক্ষম এবং তাতে অনুপস্থিত থাকার শারী‘য়াতে গ্রহণযোগ্য কোন ‘উয্‌র নেই, এমন প্রত্যেক মুছলমানের উপর জুমু‘আর সালাত আদা করা ফার্‌য।

জুমু‘আর সালাতের সময়

যুহরের সালাতের সময়ই হলো জুমু‘আর সালাতের সময়। এর প্রমাণ হলো- আনাছ رضي الله عنه হতে বর্ণিত:- 

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي الجُمُعَةَ حِينَ تَمِيلُ الشَّمْسُ. (رواه البخاري و الترمذي و أحمد)

অর্থ- সূর্য যখন মধ্য আকাশ থেকে সরে (পশ্চিম দিকে একটু ঢলে পড়ত) যেত, তখন নাবী صلى الله عليه وسلم জুমু‘আর সালাত আদায় করতেন। (সাহীহ্‌ বুখারী, তিরমিযী, মুছনাদে ইমাম আহ্‌মাদ)

জুমু‘আর দিনে করণীয়

১। ‍জুমু‘আর দিন গোছল করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া। কেননা রাছূলুল্লাহ صلى الله عليه وسلم বলেছেন:- 

إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمُ الجُمُعَةَ، فَلْيَغْتَسِلْ. (رواه البخاري)

অর্থ- তোমাদের কেউ জুমু‘আর নামায আদায় করতে আসলে তার পূর্বে সে যেন গোছল করে নেয়। (সাহীহ্‌ বুখারী)

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close