ক্বোরআনের তাফছীর (১১তম পর্ব)

এটি উছতায আবূ ছা‘আদা হাম্মাদ বিল্লাহ c প্রদত্ত একটি ধারাবাহিক অডিও বক্তব্য। উক্ত ধারাবাহিক বক্তব্যে উছতায পবিত্র ক্বোরআনের ছূরা সমূহের তাফছীর প্রদান করবেন, إِن شَاء اَللّٰه। বক্তব্যের এই পর্বে উছতায তাফছীরের নিয়ম-নীতি ও ‘উলূমুল ক্বোরআন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। নিম্নোক্ত বইসমূহ উৎস হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে-

ক) আল ‘আল্লামা ‘আব্দুল্লাহ আছ্‌ ছা‘দী o রচিত এবং শাইখ সালিহ্‌ আল ‘উছাইমীন o কর্তৃক ব্যাখ্যাকৃত আত-তা‘লীক্ব ‘আলাল ক্বাওা‘য়ীদ আল-হিছান।
খ) আল ‘আল্লামা মুহাম্মাদ ‘আলী আস্‌ সাবূনী o রচিত আত্‌ তিবয়ান ফী ‘ঊলূমিল ক্বোরআন।
গ) আল-‘আল্লামা ছুয়ূতী o রচিত আল-ইতক্বান।

এছাড়াও ছালাফদের রচিত আরো কিছু বই থেকে সারাংশ উপস্থাপন করা হবে, إِن شَاء اَللّٰه।

১) ক্বোরআনে কারীমের তাফছীর বিষয়ে রাছূলুল্লাহ 1 থেকে বর্ণিত হাদীছ খুব বেশি নয়, এর কারণ কি?
এর কারণগুলো নিম্নরূপ-
ক) রাছূলুল্লাহ 1 এর সাহাবায়ে কিরাম 4 ছিলেন ‘আরাবী ভাষাভাষী। ফলে তারা সহজেই ক্বোরআনে কারীমের আয়াতসমূহের মর্ম বুঝতে পারতেন। আল্লাহ 7 ক্বোরআনে কারীমে ইরশাদ করেছেন-

وَ لَقَدۡ یَسَّرۡنَا الۡقُرۡاٰنَ لِلذِّکۡرِ فَہَلۡ مِنۡ مُّدَّکِرٍ

অর্থাৎ- আমি ক্বোরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, অতএব উপদেশ গ্রহণের কেউ আছে কি?ছূরা আল ক্বামার- ২২
তথাপি যেসমস্ত আয়াতের মর্ম-ব্যাখ্যা তারা বুঝতে পারেননি, সেসব রাছূলুল্লাহ 1 তাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
খ) সাহাবায়ে কিরামের (4) নিকট ক্বোরআনে কারীমের কোন আয়াতের শাব্দিক ও আভিধানিক ব্যাখ্যা থেকেও আয়াতে বিদ্যমান হুক্‌ম-আহ্‌ক্বামের বিষয়টি অধিক প্রাধান্য পেত।
গ) সাহাবায়ে কিরাম 4 অনেক বেশি ব্যাখ্যা জানার থেকে নিজেদের জীবনে ক্বোরআনে কারীমের হুক্‌ম-আহ্‌ক্বাম প্রয়োগ করার প্রতি অধিকতর মনোযোগী ছিলেন।
২) আমরা ক্বোরআনে কারীমের ব্যাখ্যা কোথা থেকে পেতে পারি?
রাছূলুল্লাহ্‌র (1) পরিপূর্ণ জীবনটাই হলো ক্বোরআনে কারীমের ব্যাখ্যা। ‘আয়িশাহ d থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন- তাঁর (রাছূলুল্লাহ 1 এর) পরিপূর্ণ জীবনটাই হলো ক্বোরআন।
৩) শারী‘আতের অন্যান্য ফিক্বহী আহ্‌কামে সাহাবায়ে কিরাম ও তাবি‘ঈনের (4) মধ্যে অনেক মতপার্থক্য পাওয়া গেলেও ক্বোরআনে কারীমের তাফছীর করার ক্ষেত্রে তাদের (4) মধ্যে ইখতিলাফ খুব কমই পরিলক্ষিত হয়।। বাহ্যিকভাবে তাফছীর গ্রন্থাদিতে আয়াতসমূহের ব্যাখ্যায় সাহাবায়ে কিরাম ও তাবি‘ঈগণের যে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা আমরা দেখতে পাই- এর মূল কারণ হচ্ছে, আমরা বাস্তবে যেটাকে ভিন্নমত হিসেবে দেখছি, আসলে সেটি মৌলিকভাবে এক ও অভিন্ন। এ প্রসঙ্গে ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ o বলেছেন- এই ভিন্নতা আসলে ইখতিলাফ নয় বরং ইত্তিফাক্ব। এ বিষয়টি বুঝতে হলে দু’টি বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। আর তা হলো-
এক) ইখতিলাফ কয় প্রকার ও কি কি?
ইখতিলাফ দুই প্রকার। যেমন-
ক) ইখতিলাফে তানাওউ‘। শুধুমাত্র প্রকার আর ধরনের ভিন্নতাই হচ্ছে ইখতিলাফে তানাওউ‘।
খ) ইখতিলাফে তাযাদ। একটি মত আরেকটি মতের সম্পূর্ণ বিপরীত হওয়াই হলো ইখতিলাফে তাযাদ।
ক্বোরআনে কারীমের একটি শব্দের একাধিক অর্থ হতে পারে। আর সেই শব্দের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ ভিন্নজন গ্রহন করতে পারেন। এটি ইখতিলাফে তানাওউ‘ এর অন্তর্ভুক্ত। এখানে শাইখ প্রতিটি বিষয় উদাহরণ সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
৬) ক্বোরআনে কারীমে দেখা যায় যে, বাহ্যিকভাবে একই বিষয় ভিন্ন ভিন্ন শব্দে বর্ণিত রয়েছে, কিন্তু এগুলোর বিষয়বস্তু একই। এরূপ হওয়ার কারণ কি?
সাধারণতঃ শব্দসমূহ দুই প্রকার- সমার্থক শব্দ ও বিপরীতার্থক শব্দ। কিন্তু ‘উলামায়ে কিরাম ক্বোরআনে কারীমের শব্দগুলোকে মোট তিন প্রকারে বিন্যাস করেছেন। তৃতীয় প্রকারটি হলো- এমন শব্দ যা সমার্থকও নয়, আবার বিপরীতার্থকও নয়। ক্বোরআনে কারীমে এজাতীয় শব্দের ব্যবহার ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। আর এজাতীয় শব্দ ব্যবহারের অবশ্যই কারণ রয়েছে, যা তাফছীর অধ্যয়নকালে অনুধাবন করা যাবে, ইন-শা-আল্লাহ।

 

ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নটির উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) শাইখ! ছুন্নাহ্‌র মাধ্যমে ক্বোরআনে কারীমের তাফছীর জানতে আমাদের প্রতি আপনার দিক-নির্দেশনা কি? আর “ক্বোরআনে কারীমের তাফছীর যখন ছুন্নাহ্‌র মাধ্যমে হয়, তখন তা অনেক বেশি ব্যবহারিক হয়ে থাকে”- এ বিষয়টি যদি একটু বিশ্লেষণ করতেন!


১. ছূরা আল ক্বামার- ২২ 

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close