এটি মুহ্তারাম আশ্শাইখ সালিহ্ আলফাওযান c কর্তৃক আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের প্রখ্যাত ইমাম- ইমাম আল বারবাহারী o এর অনবদ্য গ্রন্থ “শারহুছ্ ছুন্নাহ” এর অতি চমৎকার ও মূল্যবান ব্যাখ্যাগ্রন্থের অডিও ভাষান্তর।
এই পর্বে উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c গ্রন্থটির নিম্নোক্ত পয়েন্টটি আলোচনা করেছেন, যেখানে ইমাম বারবাহারী o বলেছেন- “এবং জেনে রাখুন! আল্লাহ 0 আপনাকে রাহ্ম করুন। ব্যক্তির ইছলাম ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ হবে না, যতক্ষণ না সে প্রকৃত অর্থে ক্বোরআন ও ছুন্নাহ্র অনুসরণ, এগুলোকে মনে-প্রাণে সত্য বলে গ্রহণ এবং ক্বোরআন ও ছুন্নাহ্র কাছে আত্মসমর্পণ করবে। অতএব যে ব্যক্তি এরূপ দাবি করবে যে, ইছলামের এমন কিছু এখনো বাকি রয়ে গেছে যার পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা সাহাবায়ে কিরাম 4 দিয়ে যাননি, তাহলে সে ব্যক্তি সাহাবায়ে কিরামের প্রতি মিথ্যারোপকারী বলে গণ্য হবে। সাহাবায়ে কিরামের (4) প্রতি অপবাদ আরোপের জন্য এবং তাদের সাথে উম্মাতের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার জন্য এরূপ কথাবার্তা যথেষ্ট। যে ব্যক্তি এরূপ কথাবার্তা বলবে নিঃসন্দেহে সে বিদ‘আতী, পথভ্রষ্ট এবং অপরকে পথভ্রষ্টকারী। সে এমনসব বিষয়ের অনুপ্রবেশ ইছলামে ঘটাতে চায় প্রকৃতপক্ষে যা ইছলামের অন্তর্ভুক্ত নয়”।
এই পর্বে নিম্নোক্ত বিষয়াদী সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার আলোচনা করা হয়েছে:-
১) পূর্ববর্তী ক্লাসের সংক্ষিপ্ত পূণঃআলোচনা।
২) ব্যক্তির ইছলাম ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ হবে না, যতক্ষণ না তার মধ্যে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পাওয়া যাবে:-
ক) অনুসরণ। খ) সত্যায়ন বা সত্য বলে মনে-প্রাণে গ্রহণ। গ) আত্মসমর্পণ।
উছতায বিষয়গুলো চমৎকারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
৩) যে ব্যক্তি দাবি করে যে, রাছূলুল্লাহ 1 হতে দ্বীনী বিষয়াদির ব্যাখ্যা ও বর্ণনা পরবর্তীদের নিকট দিতে যেয়ে সাহাবায়ে কিরাম 4 ত্রুটি করেছেন কিংবা তাঁরা স্পষ্টভাবে এসবের ব্যাখ্যা ও বর্ণনা দিতে পারেননি, আর তাই দ্বীনী বিষয়ে নতুন কোন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেয়ার বা সংযোজন করার অবকাশ ও সুযোগ রয়েছে। এরূপ দাবিদার সম্পর্কে বলা যায় যে, নিঃসন্দেহে সে মানুষের অনিষ্ট সাধন করতে চায়।
৪) সাহাবায়ে কিরাম 4 রাছূলুল্লাহ 1 থেকে যা কিছু শুনেছেন, রাছূলুল্লাহ 1 থেকে যা কিছু দেখেছেন, তারা সেসব অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে স্পষ্টভাবে পরবর্তীদের নিকট পৌঁছিয়ে দিয়েছেন, এতে তারা বিন্দুমাত্র ত্রুটি কিংবা কার্পণ্য বা শৈথিল্য প্রদর্শন করেননি।
৫) ক্বোরআনে কারীমের তাফছীরের ক্ষেত্রে অন্য যে কারো তাফছীর থেকে সাহাবায়ে কিরাম 4 প্রদত্ত তাফছীরকে প্রাধান্য দিতে হবে, কারণ তাঁরা ছিলেন রাছূলুল্লাহ 1 এর প্রত্যক্ষ ছাত্র।
৬) শী‘আদের (রাফিযী সম্প্রদায়ের) মিথ্যাচার প্রত্যাখ্যান ও খন্ডন। শী‘আদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো ইছলাম ও মুছলমানদেরকে ধ্বংস করা। তারা ইছলামের ভিত্তি ধ্বংস করে দিতে চায়। একদিকে তারা রাছূলুল্লাহ 1 এর পরিবারের প্রতি (মেকি) ভালোবাসা দেখায় আর অপরদিকে রাছূলুল্লাহ 1 এর সাহাবায়ে কিরামের (4) প্রতি বিদ্বেষ পোষণ এবং তাদের সমালোচনা করে।
৭) যে ব্যক্তি বলবে যে, সাহাবায়ে কিরাম জ্ঞানের স্বল্পতাবশতঃ রাছূলুল্লাহ 1 থেকে সবকিছু সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেননি, তাহলে ঐ ব্যক্তি হলো মিথ্যুক এবং মিথ্যারোপকারী। এরূপ কথাবার্তা সাহাবায়ে কিরামের বিরোধিতারই নামান্তর।
৮) ক্বোরআন-হাদীছ কি আমাদের নিকট সাহাবায়ে কিরামের (4) মাধ্যম ব্যতীত এমনিতে পৌঁছে গেছে? মূলত: বিদ‘আতীদের স্বভাবই হলো সাহাবায়ে কিরামকে (4) আক্রমণ করে কথা বলা।
৯) সত্যপন্থীরাই হবে বিজয়ী ও সফলকাম। বাত্বিলপন্থীরা কখনো সফলকাম হতে পারবে না। এটি হলো আল্লাহ্র (7) ওয়া‘দা। উছতায এ বিষয়টি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এতদসঙ্গে শাইখ সাহাবায়ে কিরাম 4 ও তাদের যুগের মর্যাদা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। রাছূলুল্লাহ 1 ছিলেন সাহাবায়ে কিরামের (4) জন্য নিরাপত্তা আর সাহাবায়ে কিরাম4 ছিলেন তাদের পরবর্তীদের জন্য নিরাপত্তা।
ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:-
ক) আমরা কি কোন ‘আলিমের তত্ত্বাবধান ছাড়া নিজে নিজে ইছলামী ইতিহাসের বই-পুস্তক যেমন আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ইত্যাদি ‘আরাবী গ্রন্থাদী অধ্যয়ন করতে পারবো? যদি তা করা যায়, তাহলে আমাদেরকে সাহাবায়ে কিরাম 4, তাবি‘য়ীন তথা ছালাফে সালিহীনের ইতিহাস ও জীবনী সম্পর্কিত এবং বিভিন্ন দল ও ফিরক্বাহ্র ইতিবৃত্ত সম্পর্কিত কিছু বিশুদ্ধ বই-পুস্তকের নাম বলে দিন। আল্লাহ 0 আপনার মধ্যে বারাকাহ দান করুন!
খ) সাহাবায়ে কিরামের (4) মধ্যে কোনো বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলে, তাদের (4) সবার প্রতি ভালো ধারণা রেখে আমাদের কিভাবে ছুন্নাহ মোতাবিক মতপার্থক্য থাকার কারণটা বুঝার চেষ্টা করা উচিত?
“ছুন্নাহ” যেহেতু আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এক প্রকার ওহী, তাহলে তার মধ্যে ভিন্নতা থাকার “হিকমাহ”-টা আমরা কিভাবে বুঝবো?
গ) কোন বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন বা দ্বীনী ভাইদের বাড়িতে প্রবেশের আদাব বা নিয়ম-নীতি কি?
ঘ) আছ্ছালামু ‘আলাইকুম। শাইখ! সব শী‘আরা কি অমুছলিম? শী‘আ ইমামের পিছনে কি সালাত আদায় করা যাবে এবং তা কি কি শর্তে? আল্লাহ 8 আপনার মধ্যে বারাকাহ দান করুন!
ঙ) কোন বিদ‘আতির নিকট হতে কি তাজওয়ীদের জ্ঞান অর্জন করা যাবে? যদি তা শারী‘আহ সম্মত না হয়, তাহলে কি অজ্ঞাত বা বিদ‘আতী কোন লেখকের বই থেকে তাজওয়ীদের জ্ঞান অর্জন করা যাবে, যদি তার বইটি স্ববিষয়ে সঠিক হয়ে থাকে?
চ) চট্টগ্রাম শহরে যখন ক্বাওমীদের বড় কোন মাজলীছ হয়, তখন সাধারণ মানুষ সেখানে যায়। সে সকল মাজলীছগুলোতে ঐ সকল ক্বাওমী ‘আলিমরা বিভিন্নভাবে ইবনু তাইমিয়্যাহ এবং মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দিল ওয়াহ্হাব (q) এর মানহানি করার চেষ্টা করে থাকে এবং সাধারণ মানুষদেরকে এ কথা বুঝানোর চেষ্টা করে যে, এখন যেসকল লোকেরা নামাযে বুকে হাত বাঁধে কিংবা জোরে আমীন বলে, তারা এদের অনুসারী, অতএব এরা সকলে ওয়াহাবী। এমতাবস্থায় আমরা যারা ছালাফিয়্যাহ্র দা‘ওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করছি, এই পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবিলা করব? যেখানে বেশীরভাগ সময়ই ইখওয়ানরা এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখী হয়ে থাকেন, বিশেষ করে মাছজীদে সালাত আদায় করার সময়।
ছ) যদি কেউ এভাবে বলেন যে, দ্বীন সম্পর্কে কিছু কিছু সাহাবায়ে কিরামের চেয়ে আমরা বেশি জানি অর্থাৎ বেশি জ্ঞান রাখি, কারণ কিছু কিছু সাহাবায়ে কিরাম (4) আজকে ইছলাম গ্রহণ করেছেন কালকে জিহাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন এবং সেখানে শহীদ হযেছেন; কাজেই তাঁরা দ্বীন সম্পর্কে জানার সুযোগ পাননি। তাই আমরা তাদের থেকে বেশি জানি। এই ভদ্রলোক কি আমাদের সাহাবায়ে কিরামের (4) সম্মান নষ্ট করেন নি? এই মিছকীনের কথার জবাব কি হতে পারে?
জ) দা‘ওয়া দেয়ার প্রাক্কালে কিংবা দা‘ওয়াতী আলোচনায় আমরা যখন বলি যে, আমরা আহলুছ্ ছুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের বর্তমান সময়ের ‘উলামায়ে কিরামের অনুসরণ করে থাকি, তখন কোন কোন লোক বা দলের অনুসারীরা আমাদেরকে “মাদখালী” ইত্যাদি বিভিন্ন নামে অভিহিত করে থাকে। এসব লোকদের প্রতি আমাদের জাওয়াব কি হবে এবং তাদের সাথে আমাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত? আল্লাহ 7 আপনার মধ্যে বারাকাহ দান করুন!
ঝ) বিদ‘আতীদের মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ বা সরঞ্জাম কি?