নারীদের সম-সাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং তা থেকে উত্তরণের ক্বোরআন-ছুন্নাহ ভিত্তিক পথ ও পদ্ধতি (৪০নং পর্ব)

উছতায আবূ ছা`আদাহ হাম্মাদ বিল্লাহ c ধারাবাহিক এই অডিও বক্তব্যে নারীদের সম-সাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং এসকল সমস্যা থেকে উত্তোরণের পথ ও পদ্ধতি বিষয়ে ক্বোরআন-ছুন্নাহ্‌র আলোকে অত্যন্ত মূল্যবান আলোচনা পেশ করেছেন। পারিবারিক এবং বৈবাহিক জীবনে নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হওয়া, সন্তানদের লালন-পালন করা, সুখী ও সমৃদ্ধ পরিবার গড়ে তোলা, ঘরের বাইরে কাজ-কর্ম করা ইত্যাদি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হয়েছে। এই পর্বে উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c “বিয়ের রুক্‌ন এবং শর্তসমূহ” নিয়ে আলোচনা করেছেন, তন্মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় নিম্নে উল্লেখ করা হলো:-
১) বিয়ের রুক্‌নগুলো কি কি?
বিয়ের রুক্‌ন হলো- ২ টি। সেগুলো হলো-

ক) বর এবং কনে (যাদের জন্য বিয়ে করার মধ্যে কোনো শার‘য়ী প্রতিবন্ধকতা নেই)।
খ) ইজাব এবং ক্বাবূল (অনেকে ইজাব এবং ক্বাবূলকে আলাদা আলাদা রুক্‌ন বলেছেন)। ইজাব হল এই যে, মেয়ের ওলী বা অভিভাবক বলবে যে, আমি আমার কন্যাকে তোমার (বরের) কাছে বিবাহ দিচ্ছি। আর এই ইজাবের পরিপ্রেক্ষিতে যখন বলা হবে যে, আমি তাকে ক্বাবূল করলাম, তাকেই বলা হয় ক্বাবূল। (ক্বাবূল বলা ছাড়াও এই ধরনের অন্য যে কোনো শব্দ দ্বারা যখন বর তার ইতিবাচক অভিব্যক্তি প্রকাশ করবে, সেটাই হবে ক্বাবূল।)

২) যখন ইজাব ও ক্বাবূল সম্পাদিত হবে, তখন বিয়ের মূল ভিত্তি দাঁড়িয়ে যাবে। ইজাব বা ক্বাবূল এর ব্যাপারটি যে কোনো দেশের মানুষের তার নিজের ভাষায় বললেও হয়ে যাবে। তবে, ‘উলামায়ে কিরামের কথা হলো- এক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করা যাবে না।
৩) বিয়ের শর্ত বলতে আমরা কি বুঝি?
বিয়ের শর্ত এক বিষয় আর বিয়ের মধ্যে শর্ত আরেক বিষয়। বিয়ের শর্ত হলো শারি‘য়াহ কর্তৃক নির্ধারিত বিষয়। আর বিয়ের মধ্যে শর্ত হলো- বর বা কনে পক্ষ নিজেদের সুবিধার জন্য যে বিষয়গুলোকে নির্ধারণ করে নেয়।
৪) বিয়ের শর্তগুলো কি কি?
১ম শর্তঃ- বর ও কনে নির্ধারণ করা।
২য় শর্তঃ- উভয়ের সন্তুষ্টি ও মত থাকতে হবে। মতামত না নিলে বিয়ে সঠিক হবে না।
তবে কেউ অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে বা স্বাভাবিক জ্ঞানবুদ্ধি সম্পন্ন না হলে, তার অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই।
এর দালীলগুলো নিম্নরুপঃ-

ক) আবূ হুরাইরাহ 3 থেকে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- বিধবা কিংবা তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে তার সাথে পরামর্শ না করে বিয়ে দেওয়া যাবে না। আর একজন কুমারী মেয়েকেও তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না। তাকে সাহাবায়ে কিরাম (g) জিজ্ঞেস করলেন- কুমারী মেয়ের অনুমতি কিভাবে নিতে হবে? রাছূলুল্লাহ 1 বললেন- তোমার এটুকু শুনার পর যদি সে চুপ থাকে, তার মানে সে রাজী আছে।মুত্তাফাকুন আলাইহি
খ) খানসাব বিনতে খিযামাহ আল আনসারী f থেকে বর্ণিত যে, তাকে তার বাবা বিয়ে দিলেন। তখন তিনি বিবাহিত এবং স্বামী থেকে আলাদা হয়ে গেছেন। তিনি ওই বিয়েতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি রাছূলুল্লাহকে (1) বিষয়টি বললেন। পরবর্তীতে রাছূলুল্লাহ 1 এই বিয়ে বাত্বিল করে দিলেন।সাহীহ্‌ বুখারী
গ) ‘আব্বাছ 3 থেকে বর্ণিত, একজন কুমারী এসে রাছূলুল্লাহকে (1) বললেন- তার বাবা তাকে এমন একজনের সাথে বিয়ে দিচ্ছেন, যাতে তিনি সন্তুষ্ট নন। তখন রাছূলুল্লাহ 1 তাকে বললেন- তুমি চাইলে এই বিয়ে রাখতে পারো, নতুবা ভেঙ্গে দিতে পারো। অপর বর্ণনা মতে, ঐ বিয়ে তিনি ভেঙ্গে দিলেন।ছুনানু আবূ দাঊদ, ছুনানু ইবনি মাজাহ
এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, অনুমতি ছাড়া বিয়ে হবে না। এটি বিয়ের অন্যতম শর্ত। তবে, ৯ বছরের কম বয়সী মেয়ের অনুমতি ছাড়া কেবল তার পিতাই বিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
৩য় শর্তঃ- বিয়েতে সাক্ষী থাকতে হবে ২ জন পুরুষ। এক্ষেত্রে, একজন পুরুষ ও দুইজন নারী অথবা চারজন নারী সাক্ষী হিসেবে থাকলে সেই বিয়ে হবে না। অর্থাৎ সাক্ষী অবশ্যই ২ জন পুরুষ হতে হবে।

৫) বিয়েতে সাক্ষ্যদানকারীর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেগুলো হলো-

ক) সাক্ষীকে অবশ্যই পুরুষ হতে হবে।
খ) প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে।
গ) দ্বীন পালনে সচেষ্ট হতে হবে।
ঘ) অন্ধ বা বধির হওয়া যাবে না। কারন, বধির ব্যক্তি সাধারনত বোবা হয়ে থাকে। তাই, বোবার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়। তবে অনেকের মতে, বোবা যদি লিখতে পারে, তবে তার সাক্ষীও গ্রহণযোগ্য হবে।

৬) বিয়ের ৩নং শর্ত নিয়ে কিছুটা দ্বিমত পরিলক্ষিত হয়।
কেউ কেউ সাক্ষীর ব্যাপারটিকে বিয়ের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেন- সাক্ষী ছাড়াও বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যাবে। যারা সাক্ষীর ব্যাপারটিকে বিয়ের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তাদের দালীল হলো-

ক) রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- ওয়ালী ও ২জন বিশ্বস্ত সাক্ষী ছাড়া বিয়ে হবে না।বায়হাক্বী
শাইখ আলবানী o হাদীছটিকে সাহীহ্‌ বলেছেন। তবে, শাইখ উছাইমীন o হাদীছটিকে যা‘য়ীফ বলেছেন।
খ) মহান আল্লাহ 0 ক্বোরআনে কারীমের ছূরা আত্‌ ত্বালাক্বের ২নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন-

إِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ فَارِقُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ وَأَشْهِدُوا۟ ذَوَىْ عَدْلٍ مِّنكُمْ وَأَقِيمُوا۟ ٱلشَّهَٰدَةَ لِلَّه

অর্থাৎ- অতঃপর যখন তাদের (‘ইদ্দাতের) সময়কাল এসে যায়, তখন তাদেরকে ভালভাবে (স্ত্রী হিসেবে) রেখে দাও অথবা ভালোভাবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দাও। আর তোমাদের মধ্যকার দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখো। তোমরা আল্লাহর জন্যে সঠিকভাবে সাক্ষ্য দাও।
অর্থাৎ ফিরিয়ে নেওয়ার সময় যদি সাক্ষীর প্রয়োজন হয়, তবে নতুন বিবাহের সময় তো এটি আরো বেশি প্রয়োজন।
আবার যারা বলেন যে, সাক্ষী ছাড়াও বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যাবে, তাদের কথা হল, বায়হাক্বীতে বর্ণিত হাদীছটি যা‘য়ীফ। তাই এটি দালীল হতে পারে না। আর ছূরা ত্বালাক্বের ২নং আয়াতটিও বিষয় সংশ্লিষ্ট নয়। তবে, ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ o ও জামহূর ‘উলামায়ে কিরামের মতে, সাক্ষী থাকা ভালো। অথবা বিয়ের ব্যাপারটি মানুষজনকে এ‘লান করে জানিয়ে দিতে হবে। কারণ, বায়হাক্বীতেই বর্ণিত আরেকটি হাদীছে এসেছে যে, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- বিয়ের বিষয়টা তোমরা (মানুষজনকে) জানিয়ে দাও।

৭) ওয়ালী ছাড়া বিবাহ গ্রহণযোগ্য হবে কি?
এই ব্যাপারে ‘উলামায়ে কিরামের মধ্যে দ্বিমত পরিলক্ষিত হয়। যেমন, ইমাম মালিক o, ইমাম শাফি‘য়ী o, ইমাম আহ্‌মাদ o এর মতে, ওয়ালী ছাড়া বিবাহ গ্রহণযোগ্য হবে না। কিবারুস্‌ সাহাবাদেরও (g) একই মত।
তাদের দালীল হলো-

ক) মু‘আয ইবনু জাবাল 3 থেকে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন, যে নারী তার ওয়ালীর অনুমতি ছাড়া নিজেই নিজেকে বিবাহ দিবে, তার বিয়ে বাত্বিল, বাত্বিল, বাত্বিল।
খ) আবূ মূছা আশ্‌‘আরী 3 থেকে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- ওয়ালী ছাড়া কোনো বিয়ে হবে না।
গ) আবূ হুরাইরাহ 3 থেকে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন, একজন নারী যেন অন্য নারীকে বিয়ে না দেয় এবং নিজেকে নিজে বিয়ে না দেয়। কারণ, ব্যভিচারিণী তাকেই বলা হয়, যে নিজেকে নিজেই বিয়ে দেয়।ছুনানু ইবনি মাজাহ
ঘ) মা‘ক্বাল ইবনু ইয়াছার 3 বলেন, তিনি তার বোনকে একটি লোকের কাছে বিবাহ দিলেন। ওই লোক তার বোনকে তালাক দিয়ে দিল। ‘ইদ্দাত পূর্ণ হবার পরে ওই লোক আবার তার বোনকে বিবাহ করতে চাইল। তখন মা‘ক্বাল ইবনু ইয়াছার 3 ঐ লোকটিকে বললেন- তোমার জন্য আমি এত কিছু করলাম, অথচ এর পরও তুমি আমার বোনকে তালাক দিয়ে দিলে। এখন আবার তাকে বিবাহ করতে এসেছ? তুমি আর কোনোদিন তার কাছে ফিরে আসবে না। তিনি বলেন- “ওই লোকটি মন্দ ছিল না”। আর তাঁর বোনও মনে মনে ওই লোকের কাছে ফিরে যেতে চাইছিল। কিন্তু তিনি এতে বাঁধা দিলেন। তখন এর পরিপ্রেক্ষিতে ছূরা বাক্বারার ২৩২ নং আয়াত নাযিল হয়। যেখানে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন-

وَإِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَاءَ فَبَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا تَعْضُلُوهُنَّ أَنْ يَنْكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ إِذَا تَرَاضَوْا بَيْنَهُمْ بِالْمَعْرُوفِ

অর্থাৎ- যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, তারপর তাদের ‘ইদ্দাত পূর্ণ হয়ে যায়, সে অবস্থায় তারা স্বামীদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইলে তাদেরকে বাঁধা দিও না, যখন তারা বৈধভাবে উভয়ে আপোষে সম্মত হয়।
এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর মা‘ক্বাল ইবনু ইয়াছার 3 বললেন- এবার আমি তাহলে সে কাজটা করবো (তাদের বিবাহ দিবো)। এর দ্বারা বুঝা যায়, মা‘ক্বাল ইবনু ইয়াছার 3 এর বোনের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভাইয়ের অনুমতির জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন।
তবে ইমাম আবূ হানিফা o থেকে ২টি মত পাওয়া যায়। প্রথমটি হলো- প্রাপ্তবয়স্কা, স্বাধীন ও বিবেকবান একজন নারী নিজে (ওয়ালী ছাড়া) বিয়ে করতে পারে এবং অন্য মেয়েকেও বিয়ে দিতে পারে। তার অপর আরেকটি মত অনুযায়ী, যদি কোনো নারী কুফু ঠিক রেখে (উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন বরকে) বিয়ে করে, তবে বিয়েটি জা-ইয হবে। নতুবা নয়। তাদের দালীল হলো-
ক) ‘আব্বাছ 3 থেকে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- একজন বিবাহ বিচ্ছেদিত নারী তার নিজের উপর অধিকার তার ওয়ালী থেকে বেশি রাখে। তবে কুমারী হলে অনুমতি নিতে হবে। আর তা হলো তার (কুমারীর) চুপ থাকাটা।সাহীহ্‌ মুছলিম
খ) ছাহল ইবনু ছা‘দ 3 থেকে বর্ণিত, একজন নারী এসে রাছূলুল্লাহ্‌কে (1) বললেন- আমি নিজেকে আপনার কাছে সোপর্দ (বিয়ে) করতে চাই। রাছূলুল্লাহ্‌র (1) কোনো প্রয়োজন ছিল না। সেখানে উপস্থিত আরেকজন সাহাবী বললেন- আমি তাকে বিয়ে করবো। রাছূলুল্লাহ 1 বললেন- মোহর কি আছে? তার কাছে কিছুই ছিল না। তবে তিনি ক্বোরআনের কিছু ছূরা মুখস্থ পারতেন। সেগুলো সেই মেয়েকে শিখানোর বিনিময়ে রাছূলুল্লাহ 1 তাদের বিয়ে দিয়ে দিলেন।সাহীহ্‌ বুখারী
এর থেকে বুঝা যায় যে, একজন নারী নিজেই নিজেকে বিয়ে দিতে পারে। তবে সঠিক কথা হলো- ওয়ালী ছাড়া বিবাহ গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ, ‘আব্বাছ 3 থেকে বর্ণিত হাদীছে বলা হয়েছে, নারীর অধিকার তার ওয়ালী থেকে বেশি। এটা উল্লেখ করা হয়নি যে, ওয়ালীর কোনো অধিকার নেই। আবার, ছাহল ইবনু ছা‘দ 3 থেকে বর্ণিত হাদীছটির মাছআলা শুধুমাত্র রাছূলুল্লাহ 1 এর জন্য খাছ। কারণ, ছূরা আহ্‌যাবের ৫০ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ ইরশাদ করেছেন-

يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ إِنَّآ أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَٰجَكَ ٱلَّٰتِىٓ ءَاتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّٰتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَٰلَٰتِكَ ٱلَّٰتِى هَاجَرْنَ مَعَكَ وَٱمْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِن وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِىِّ إِنْ أَرَادَ ٱلنَّبِىُّ أَن يَسْتَنكِحَهَا خَالِصَةً لَّكَ مِن دُونِ ٱلْمُؤْمِنِينَ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ إِنَّآ أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَٰجَكَ ٱلَّٰتِىٓ ءَاتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّٰتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَٰلَٰتِكَ ٱلَّٰتِى هَاجَرْنَ مَعَكَ وَٱمْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِن وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِىِّ إِنْ أَرَادَ ٱلنَّبِىُّ أَن يَسْتَنكِحَهَا خَالِصَةً لَّكَ مِن دُونِ ٱلْمُؤْمِنِينَ

অর্থাৎ- হে নাবী (সা.)! আমি আপনার জন্য বৈধ করেছি আপনার স্ত্রীগণকে যাদেরকে আপনি প্রাপ্য মোহর প্রদান করেছেন, আর আল্লাহ আপনাকে ফায় হিসেবে (বিনা যুদ্ধে লব্ধ) যা দান করেছেন তার মধ্য হতে যারা আপনার মালিকানাধীন হয়েছে তাদেরকে, আর আপনার চাচার কন্যা ও ফুফুর কন্যাকে, আপনার মামার কন্যা ও আপনার খালার কন্যাকে যারা আপনার সঙ্গে হিজরাত করেছে। এবং কোন মূমিন নারী যদি নাবীর নিকট নিজেকে নিবেদন করে আর নাবী যদি তাকে বিয়ে করতে চান (তাহলে তাকেও বৈধ করেছি), এটা বিশেষভাবে আপনার জন্য, মু’মিনদের জন্য নয়।

৮) ওয়ালী আসলে কারা?
ওয়ালী নিম্ন ক্রমানুসারে প্রযোজ্য হবে- যেমন- কন্যার পিতা-> পিতার নিযুক্ত ওয়াকীল-> দাদা-> পিতার দাদা-> এরপর তার উপরের দাদা(থাকলে)-> (মহিলা প্রাপ্তবয়স্কা হলে) তার পূর্বের স্বামীর ঘরের পুত্র-> সেই ছেলের ঘরের পুত্র-> সেই ছেলের ঘরের নাতী-> কনের আপন ভাই-> কনের বৈপিতৃয় ভাই-> কনের আপন চাচা-> চাচাতো ভাই-> চাচাতো ভাই এর ছেলে। ওয়ালীকে অবশ্যই দুইটি গুণের অধিকারী হতে হবে। সেগুলো হলো-

ক) ওয়ালীকে অবশ্যই একই ধর্মের অনুসারী হতে হবে।
খ) ওয়ালীকে অবশ্যই স্বাধীন হতে হবে।

৯) আত্মীয়তার বাইরে দুইজন ওয়ালী হতে পারবে।
একজন হলো ওয়াকীল, যাকে কনের পিতা তার জীবদ্দশায় নিযুক্ত করে যাবে। আরেকজন হলো ওয়াসী। যাকে কনের পিতা স্বীয় মৃত্যু পরবর্তী সময়ের জন্য নিজের স্থলাভিষিক্ত করে যাবে। কনের চাচাও ওয়াকীল নিযুক্ত করতে পারবে। কিন্তু, শুধুমাত্র কনের বাবা ওয়াসী নিযুক্ত করতে পারবে।
১০) মেয়ের বাবা যদি ওয়াসী ঠিক করে যায়, কিন্তু মেয়ের দাদা বা ভাই জীবিত থাকে, তখন কে বেশি অগ্রাধিকার পাবে?
এক্ষেত্রে দ্বিমত রয়েছে। কারো মতে, ওয়াসী অগ্রাধিকার পাবে। আবার কারো মতে, ওয়ালী অগ্রাধিকার পাবে। শাইখ উছাইমীন o বলেন- দু’জনের মধ্যে সমঝোতা করে নিলেই হয়ে যাবে।


১. মুত্তাফাকুন আলাইহি 
২. সাহীহ্‌ বুখারী 
৩. ছুনানু আবূ দাঊদ, ছুনানু ইবনি মাজাহ 
৪. বায়হাক্বী 
৫. ছুনানু ইবনি মাজাহ 
৬. সাহীহ্‌ মুছলিম 
৭. সাহীহ্‌ বুখারী 

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close