ড. আশ্‌ শাইখ সালিহ্‌ আল ফাওযান কর্তৃক ব্যাখ্যাকৃত ইমাম আল বারবাহারী রচিত “শারহুছ্ ছুন্নাহ (ছুন্নাতের ব্যাখ্যা)” (৩৫নং পর্ব)

এটি মুহ্‌তারাম আশ্‌শাইখ সালিহ্‌ আলফাওযান (c) কর্তৃক আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের প্রখ্যাত ইমাম- ইমাম আল বারবাহারী (o) এর অনবদ্য গ্রন্থ “শারহুছ্‌ ছুন্নাহ” এর অতি চমৎকার ও মূল্যবান ব্যাখ্যাগ্রন্থের অডিও ভাষান্তর। বাংলা ভাষায় গ্রন্থটি ধারাবাহিকভাবে অডিও ভাষান্তর করছেন উছতায আবূ ছা‘আদা হাম্মাদ বিল্লাহ (c)। অদ্যকার আলোচনায় উছতায ক্বাবরের ‘আযাব এবং মুনকার ও নাকীর ফিরিশতাদ্বয়ের প্রতি বিশ্বাস পোষণ বিষয়ে মূল্যবান আলোচনা করেছেন। এছাড়াও তাতে নিম্নোক্ত বিষয়াদী সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার আলোচনা করা হয়েছে:-
১) আহলুছ্‌ ছুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ‘আক্বীদাহ-র অন্তর্ভুক্ত অন্যতম একটি বিষয় হলো- ক্বাবরের শাস্তি ও সুখ-শান্তিতে বিশ্বাস পোষণ করা।
২) দুন্‌ইয়া ও আখিরাতের জীবনের মধ্যবর্তী সময়কালই হলো ক্বাবরের জীবন। আর এজন্যই এ সময়কালকে বারযাখ তথা অন্তবর্তীকালীন জীবন বা (দুন্‌ইয়া ও আখিরাতের জীবনের মধ্যে) অন্তরালের জীবন বলা হয়।
৩) মানুষ পর্যায়ক্রমে যে তিন আবাসস্থলে অবস্থান করবে। সেগুলো হলোঃ-

ক) পৃথিবীতে বা দুন্‌ইয়ার গৃহে।
খ) দারুল বারযাখ বা ক্বাব্‌রের গৃহে।
গ) আখিরাতে বা চিরস্থায়ী গৃহে।

৪) ক্বাব্‌র কোন চিরস্থায়ী আবাসস্থল নয়।
৫) আনাছ 3 বর্ণিত, সাহীহ বুখারী ও সাহীহ মুছলিমে উদ্ধৃত হাদীছ- “মৃত ব্যক্তিকে ক্বাবরে রেখে যখন তাকে মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হবে, এবং মানুষ যখন তাকে ক্বাবরে রেখে চলে যেতে শুরু করবে, সে তখন তাদের জুতার খটখট শব্দ অবশ্যই শুনতে পাবে——–”।
৬) মৃত ব্যক্তিকে ক্বাব্‌রে দু’জন ফিরিশতা প্রশ্ন করবেন- তোমার রাব্‌ কে? তোমার দ্বীন তথা ধর্ম কি? তোমার নাবী কে?
৭) কারা এই সব প্রশ্নের সম্মুখীন হবে, আর কারা এসব প্রশ্ন থেকে অব্যাহতি পাবেন?
৮) মুছলিম ব্যক্তি ক্বাব্‌রে তাকে জিজ্ঞাসিত সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম হবে এবং প্রতিদানে সে জান্নাতী সুখ লাভ করবে। অপরদিকে একজন অবিশ্বাসী কিংবা মুনাফিক্ব ব্যক্তি ক্বাব্‌রে তাকে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে না, পরিণামে সে শাস্তি ভোগ করবে।
৮) একজন মুছলমানের ক্বাব্‌রের জীবন কেমন হবে আর একজন অবিশ্বাসী বা মুনাফিক্বের ক্বাব্‌রের জীবন কেমন হবে, উছতায বিষয়টি সবিস্তার আলোচনা করেছেন।
৯) মু‘তাযিলাহ সম্প্রদায় ক্বাব্‌রের ‘আযাব সম্পর্কে বর্ণিত মুতাওয়াতির হাদীছগুলো অস্বীকার করে।
১০) যে ব্যক্তি ক্বাব্‌রের ‘আযাব অস্বীকার করে, সে হয়ত অবিশ্বাসী; কাফির বলে গণ্য হবে নতুবা সে বিপথগামী হিসেবে গণ্য হবে (এটা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নির্দিষ্ট কিছু অবস্থার উপর)।
১১) মুনকার ও নাকীর এরা হলেন দু’জন ফিরিশতাহ, যারা মৃত ব্যক্তির নিকট আসবেন এক ভয়ঙ্কর আকৃতিতে।
১২) মুছলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশসমূহের সীমান্তরক্ষী বিশেষ করে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের জন্য একটি সুসংবাদ।

 

ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:
ক) শাইখ! মুহার্‌রাম মাসকে কেন্দ্র করে শী‘আ সম্প্রদায় কর্তৃক আয়োজিত মিছিল বা শোভাযাত্রায় কিংবা পুরান ঢাকায় অবস্থিত হোসনী দালানে নির্মিত ভুয়া ক্বাবর যিয়ারতে যেসব মুছলমান অংশগ্রহণ করে, যারা বিশেষ করে এই মাসে পশু জবাই সহ নানারকম নযর-মানত করে থাকে, তাদের প্রতি আপনার নাসীহাহ্‌ কি?
খ) “দেলোয়ার হুসেন সাইদী” নামে একজন দা‘য়ী তার এক বক্তব্যে বলেছেন যে, “হিন্দুরা হলো আমাদের ভাই, আমরা তাদের প্রতি অসাম্প্রদায়িক আচরণ করবো না”। শাইখ! এজাতীয় রাজনৈতিক বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের ব্যাপারে ক্বোরআন-ছুন্নাহর আলোকে আমাদের অবস্থান কেমন হওয়া উচিত?
আল্লাহ আপনার মধ্যে বারাকাহ দান করুন!
গ) বাংলাদেশে হিযবুত্‌ তাহ্‌রীর নামে পরিচিত একটি দলের জ্ঞান-বিশ্বাস হলো যে, খবরে ওয়াহিদের বর্ণনা (কেবল একজন বর্ণনাকারীর সূত্রে বর্ণিত হাদীছ) গ্রহণযোগ্য নয়। আর এজন্যই তারা ক্বাবরের ‘আযাবকে অস্বীকার করে। মৃত্যুর পর এজাতীয় লোকদেরকে কি তাদের অজ্ঞতা বিবেচনায় ক্ষমা করা হবে, না-কি কুফ্‌রের জন্য তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে?

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close