এটি মুহ্তারাম আশ্শাইখ সালিহ্ আলফাওযান c কর্তৃক আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের প্রখ্যাত ইমাম- ইমাম আল বারবাহারী o এর অনবদ্য গ্রন্থ “শারহুছ্ ছুন্নাহ” এর অতি চমৎকার ও মূল্যবান ব্যাখ্যাগ্রন্থের অডিও ভাষান্তর। এতে ইছলামের মৌলিক বিষয়াদী, সঠিক ইছলামী ‘আক্বীদাহ ও মানহাজ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় গ্রন্থটি ধারাবাহিকভাবে অডিও ভাষান্তর করছেন উছতায আবূ ছা‘আদা হাম্মাদ বিল্লাহ c। এই পর্বে নিম্নোক্ত বিষয়াদী সম্পর্কে অত্যন্ত চমৎকার আলোচনা করা হয়েছে:-
১) পূর্ববর্তী ক্লাসের ধারাবাহিক আলোচনা। যেখানে ইমাম বারবাহারী o বলেছেন:- আমাদের রাব; আল্লাহ 0 তিনি হলেন সর্বপ্রথম, তাঁর আগে আর কিছু নেই। “কখন থেকে তাঁর শুরু” তিনি এই প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। তিনিই সর্বশেষ-অনন্ত, তাঁর পরে আর কিছু নেই। প্রকাশ্য ও গোপনীয় সর্ববিষয়ে তিনি সম্যক অবগত। তিনি ‘আর্শের উপর অবস্থানরত। তাঁর জ্ঞান সর্বত্র। তাঁর জ্ঞানের বাইরে কোন স্থান কিংবা বস্তু নেই।
২) ইমাম বারবাহারীর (o) উপরোক্ত বক্তব্যের ব্যাখ্যায় শাইখ সালিহ্ আল ফাওযান c বলেছেন যে, আল্লাহ 7 হলেন সর্বপ্রথম এবং অনাদি, যার কোন শুরু নেই। তিনিই সর্বশেষ-অনন্ত, তাঁর কোন শেষ নেই। ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন:-
هُوَ الاْوَّلُ وَالاْخِرُ وَالظَّـهِرُ وَالْبَـطِنُ.سورة الحديد- ٣
অর্থাৎ- তিনিই সর্বপ্রথম এবং সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।ছূরা আল হাদীদ- ৩
আয়াতে উল্লেখিত আল্লাহ্র (7) চারটি সিফাত একটি অপরটির সম্পূর্ণ বিপরীত। আল আওয়্যাল (সর্বপ্রথম/অনাদি) এটি আল আ-খির (সর্বশেষ/অনন্ত) এর বিপরীত। আয যাহির (প্রকাশমান) এটি আল বাত্বিন (অপ্রকাশমান/সবচেয়ে নিকটবর্তী) এর বিপরীত।
৩) শাইখ সালিহ্ আল ফাওযান c প্রদত্ত ব্যাখ্যার আলোকে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ বিশ্লেষণ-
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَهُوَ الْحَكِيمُ الْخَبِيرُ.سورة الأنعام- ١٨
অর্থাৎ- তিনিই পরাক্রান্ত স্বীয় বান্দাদের উপর। তিনিই প্রজ্ঞাবান, সর্বজ্ঞ।ছূরা আল আন‘আম- ১৮
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَيُرْسِلُ عَلَيْكُمْ حَفَظَةً حَتَّىٰ إِذَا جَاءَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لَا يُفَرِّطُونَ.سورة الأنعام- ٦١
অর্থাৎ- তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রবল পরাক্রান্ত। তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী। অবশেষে যখন তোমাদের কারো নিকট মৃত্যু আসে তখন আমার রাছূলগণ তার মৃত্যু ঘটায় এবং তারা অবহেলা করে না।ছূরা আ আন‘আম- ৬১
لاَ يَخْفَى عَلَيْهِ شَىْءٌ فِي الاٌّرْضِ وَلاَ فِى السَّمَآءِ.سورة ال عمران- ٥
অর্থাৎ- আল্লাহর নিকট আছমান ও যমীনের কোন বিষয়ই গোপন নেই।ছূরা আ-লে ‘ইমরান- ৫
وَمَا قَدَرُواْ اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالاٌّرْضُ جَمِيعـاً قَبْضَـتُهُ يَوْمَ الْقِيَـمَةِ وَالسَّمَـوَتُ مَطْوِيَّـتٌ بِيَمِينِهِ سُبْحَـنَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ.سورة الزمر- ٦٧
অর্থাৎ- তারা আল্লাহ্কে যথার্থরূপে বোঝেনি। ক্বিয়ামাতের দিন গোঁটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আছমান সমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে।ছূরা আয্ যুমার- ৬৭
يأَيُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ إِنَّ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَن يَخْلُقُواْ ذُبَاباً وَلَوِ اجْتَمَعُواْ لَهُ وَإِن يَسْلُبْهُمُ الذُّبَابُ شَيْئاً لاَّ يَسْتَنقِذُوهُ مِنْهُ ضَعُفَ الطَّالِبُ وَالْمَطْلُوبُ – مَا قَدَرُواْ اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِىٌّ عَزِيزٌ.سورة الحج- ٧٣-٧٤
অর্থাৎ- হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা কান পেতে শুনো; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনো একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে এই উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না, প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন। তারা আল্লাহর যথাযোগ্য মর্যাদা বোঝেনি। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিধর, মহাপরাক্রমশীল।ছূরা আল হাজ্জ- ৭৩-৭৪
إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَـوَتِ وَالاٌّرْضَ أَن تَزُولاَ وَلَئِن زَالَتَآ إِنْ أَمْسَكَهُمَا مِنْ أَحَدٍ مِّن بَعْدِهِ إِنَّهُ كَانَ حَلِيماً غَفُوراً.سورة فاطر- ٤١
অর্থাৎ- নিশ্চয় আল্লাহ আছমান ও যমীনকে স্থির রাখেন, যাতে টলে না যায়। যদি এগুলো টলে যায় তবে তিনি ব্যতীত কে এগুলোকে স্থির রাখবে? তিনি সহনশীল, ক্ষমাশীল।ছূরা ফাত্বির- ৪১
وَيَعْلَمُ مَا فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَا تَسْقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلاَّ يَعْلَمُهَا وَلاَ حَبَّةٍ فِى ظُلُمَـتِ الاٌّرْضِ وَلاَ رَطْبٍ وَلاَ يَابِسٍ إِلاَّ فِى كِتَـبٍ مُّبِينٍ.سورة الأنعام- ٥٩
অর্থাৎ- স্থলে ও জলে কি আছে, তিনি (আল্লাহ) তা জানেন। কোন পাতা ঝরলে সে সম্পর্কেও তিনি অবগত। এমনকি পৃথিবীর অন্ধকার অংশে থাকা শস্যকণা এবং প্রতিটি আর্দ্র ও শুষ্ক দ্রব্য সবই সুস্পষ্ট গ্রন্থে রয়েছে।ছূরা আল আন‘আম- ৫৯
وَهُوَ الَّذِي يَتَوَفَّاكُم بِاللَّيْلِ وَيَعْلَمُ مَا جَرَحْتُم بِالنَّهَارِ ثُمَّ يَبْعَثُكُمْ فِيهِ.سورة الأنعام- ٦٠
অর্থাৎ- এবং তিনিই তোমাদেরকে মৃত্যুদান করেন রাতে এবং দিনের বেলা তোমরা যা শিকার করো তিনি সে সম্পর্কে জানেন, অতঃপর তোমাদেরকে দিবসে পুনর্জীবিত করেন।ছূরা আল আন‘আম- ৬০
قُل لَّئِنِ اجْتَمَعَتِ الإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى أَن يَأْتُواْ بِمِثْلِ هَـذَا الْقُرْءَانِ لاَ يَأْتُونَ بِمِثْلِهِ وَلَوْ كَانَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ ظَهِيرًا.سورة الإسراء- ٨٨
অর্থাৎ-বলুন! যদি মানব ও জিন এই ক্বোরআনের অনুরূপ রচনা করে আনয়নের জন্যে জড়ো হয়, এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়; তবুও তারা কখনও এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না।ছূরা আল ইছরা- ৮৮
وَأُوحِىَ إِلَىَّ هَـذَا الْقُرْءَانُ لاٌّنذِرَكُمْ بِهِ وَمَن بَلَغَ.سورة الأنعام- ١٩
অর্থাৎ-আমার প্রতি এ ক্বোরআন অবতীর্ণ হয়েছে- যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ ক্বোরআন পৌঁছে সবাইকে ভীতি প্রদর্শন করি।ছূরা আল আন‘আম- ১৯
ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) “আয্ যাহির” এবং “আল বাত্বিন” এর প্রকৃত অর্থ কি?
২) আছ্ছালামু ‘আলাইকুম। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট ডিজাইনকরণ ও তৈরি করার প্রতি ‘উলামায়ে কিরাম কি উৎসাহিত করে থাকেন? বর্তমানকালে বিজ্ঞানীরা রোবট তৈরি করে যে গর্ববোধ করে এ বিষয়ে ‘উলামায়ে কিরামের অভিমত কি?
৩) অনিচ্ছা সত্ত্বেও যদি মনের ভিতর বার বার কুফরী চিন্তা চলে আসে, তাহলে তার ব্যাপারে হুক্ম কি?