নারীদের সম-সাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং তা থেকে উত্তরণের ক্বোরআন-ছুন্নাহ ভিত্তিক পথ ও পদ্ধতি (৪১নং পর্ব)

উছতায আবূ ছা`আদাহ হাম্মাদ বিল্লাহ c ধারাবাহিক এই অডিও বক্তব্যে নারীদের সম-সাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং এসকল সমস্যা থেকে উত্তোরণের পথ ও পদ্ধতি বিষয়ে ক্বোরআন-ছুন্নাহ্‌র আলোকে অত্যন্ত মূল্যবান আলোচনা পেশ করেছেন।পারিবারিক এবং বৈবাহিক জীবনে নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হওয়া, সন্তানদের লালন-পালন করা, সুখী ও সমৃদ্ধ পরিবার গড়ে তোলা, ঘরের বাইরে কাজ-কর্ম করা ইত্যাদি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হয়েছে।  এই পর্বে উছতায হাম্মাদ বিল্লাহ c ‘বর্তমান সময়ে বিয়ে হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়সমূহ এবং একজন সৎকর্মশীলা স্ত্রীর গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করেছেন’, তন্মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় নিম্নে উল্লেখ করা হলো:-
১) বর্তমান সময়ে একজন ছেলে বা মেয়ের বিয়ে হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাঁধা বা অন্তরায় সমূহ কি কি?

ক) বর্তমান সময়ের বিয়েগুলোতে দেখা যায় যে, মেয়ে পক্ষ অতিরিক্ত মোহর দাবি করে বসে। অথচ, জামি‘উত্‌ তিরমিযী-তে ‘উমার 3 থেকে একটি আ-ছার বর্ণিত আছে। তিনি বলেন- আমার জানামতে, রাছূলুল্লাহ 1 তার স্ত্রীদের মোহর হিসেবে বা তার মেয়েদের বিয়ের মোহর হিসেবে ১২ ঊক্বিয়ার বেশি কখনোই নির্ধারণ করেননি। অপর আরেকটি হাদিছে এসেছে, আবূ হুরাইরাহ 3 বলেন, রাছূলুল্লাহ 1 তাঁর একজন সাহাবির কাছে একজন মহিলাকে বিবাহ দিয়েছিলেন আর মোহর নির্ধারণ করেছিলেন- ঐ মহিলাকে কুরআন শিখানো। অতপর তিনি (সাহাবী) বলেন, তোমরা অতিরিক্ত মোহর দিও না। কারন, এটি যদি আল্লাহ্‌র (7) কাছে কোনো বাড়তি সম্মান বা তাক্বওয়ার কারণ হতো, তাহলে এর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ছিলেন তোমাদের নাবী 1মুত্তাফাক্বোন আলাইহি ‘আয়িশাহ-কে (f) যখন জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার মোহর কত ছিল? তিনি বললেন- রাছূলুল্লাহ 1 তার স্ত্রীদেরকে সাড়ে ১২ ঊক্বিয়া মোহর দিয়েছেন।
১২ ঊক্বিয়া= ৫০০ দিরহাম।
উম্মাহাতুল মু’মিনীন থেকে আমাদের কারো মেয়ে বা বোন তো বেশি সম্মানীত নয়। সুতরাং এর চেয়ে বেশি মোহর নির্ধারণ করা যুক্তিযুক্ত নয়। এবং এর মধ্যে কোনো তাক্বওয়াও নেই। রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- যখন তোমাদের কাছে এমন কেউ আসবে, যার দ্বীন এবং আখলাক্ব তোমার কাছে পছন্দনীয় হবে, তার কাছে তুমি (তোমার মেয়েকে) বিয়ে দিয়ে দাও। এখানে তুমি বেশি মোহর দাবি করো না আর অন্য কিছুও চিন্তা করো না। যদি তা না করো, তবে তা যমীনে বিরাট বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে।জামি‘উত্‌ তিরমিযী, ছুনানু ইবনি মাজাহ বর্তমান সময়ে বিয়ের জন্য আরেকটি অন্যতম অন্তরায় হলো, বর পক্ষ কর্তৃক অন্যায় যৌতুক দাবি করা। যা ইছলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম।
খ) বিয়েতে মাত্রাতিরিক্ত খরচ।
এই ব্যাপারে রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- যে বিয়ের খরচ কম, সেটি অনেক বারাকাতপূর্ণ।মুছনাদুল ইমাম আহ্‌মাদ অন্য আরেকটি হাদীছে রাছূলুল্লাহ 1 ‘আব্দুর রাহ্‌মান ইবনু ‘আউফ-কে (3) বলেছেন- একটি ছাগলের বাচ্চা দিয়ে হলেও তুমি তোমার ওয়ালীমাহ কর।
তিনি (রাছূলুল্লাহ 1) নিজেও তাঁর ওয়ালীমাহ দুই মুদ্দ (প্রায় দেড় কেজি) আটা দিয়ে করেছেন। এছাড়াও আল্লাহ 0 ছূরা ইছরার ২৭ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন-

إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ

অর্থাৎ- নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই।
গ) ছেলে বা মেয়েকে তাদের মাতা-পিতা আগে থেকে সংসার সম্পর্কে কোনো ধারণা দেয় না। এতে দেখা যায়, তাদের বিয়ের বয়স হয়ে গেলেও তারা মানসিকভাবে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হতে পারে না।
ঘ) মেয়ে যদি চাকরি করে, তাহলে অনেক অভিভাবক তাকে আর বিয়ে দিতে চায় না। কারণ বিয়ে হয়ে গেলে তো তার চাকরির টাকাটা হাতছাড়া হয়ে যাবে।

২) ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাছ‘ঊদ 3 থেকে বর্ণিত, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন- দুন্‌ইয়া হচ্ছে ভোগের সামগ্রী। আর এই দুন্‌ইয়াতে শ্রেষ্ঠ ভোগের সামগ্রী হচ্ছে- একজন সৎকর্মশীলা নারী।সাহীহ্‌ মুছলিম, ছুনানুন্‌ নাছায়ী, ছুনানু ইবনি মাজাহ
তাই, নিজের স্ত্রী সৎকর্মশীলা কি-না, এটা বুঝার উপায় কি?
যেমন, মহান আল্লাহ 0 ছূরা নিছার ৩৪নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন-

فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ

অর্থাৎ- পুণ্যবান স্ত্রীরা (আল্লাহ ও স্বামীর প্রতি) হলো অনুগতা এবং (স্বামীর) অনুপস্থিতিতে (স্বীয় সতীত্ব ও স্বামীর সম্পদ) সংরক্ষণকারীণী কারণ আল্লাহ (তাদেরকে) হিফাযাত করেছেন। এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে ‘উলামায়ে কিরাম সৎকর্মশীলা নারীদের কতিপয় বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন, সেগুলো হলো-

ক) তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- তারা সঠিক মতামত ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।
খ) দ্বীনের স্বার্থে তারা তাদের পরিবার-পরিজন ও মাতৃভূমি ছেড়ে হিজরাত করতে পারে।
গ) তারা ভালো কাজে দ্রুত এগিয়ে যায়।
ঘ) তাদের মধ্যে সতীত্ব-সাধ্বীত্ব অকল্পনীয়ভাবে বিদ্যমান থাকে।
ঙ) তারা আল্লাহ্‌র নিদর্শন সমূহকে যথেষ্ট সম্মান করে।
চ) আল্লাহ্‌র পথে কোনো নিন্দুকের নিন্দাকে তারা ভয় করে না।
ছ) তারা ইবাদাতগুজার হয়ে থাকে। তারা ফার্‌য ‘আমালের পাশাপাশি (স্বামীর অনুমতি নিয়ে) নাফ্‌ল সালাত ও সিয়াম পালন করে।
জ) দুন্‌ইয়ার প্রতি তাদের কোনো মোহ থাকে না।
ঝ) দ্বীনের পথে কষ্ট সহ্য করতে পারে। এরপরও তাদেরকে সদা হাসোজ্জ্বল দেখা যায়।
ঞ) তারা বিপদে-আপদে ধৈর্যধারণ করে।
ট) তারা স্বীয় সন্তানের মঙ্গলকামী হয়।
ঠ) তারা নিজ স্বামীকে যথেষ্ট সম্মান করে।
ড) তারা স্বামীর সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়।
ঢ) তারা তাদের স্বামীর সাথে সদা একাত্মতা থাকে।
ণ) স্বামীর মৃত্যুর পর তার আমানাত রক্ষা করে। তার সম্পদ এবং সন্তানদের দেখে-শুনে রাখে। যদিও স্বামীর মৃত্যুর পর অন্যত্র বিয়ে করা জা-ইয আছে, তথাপি তারা আমানাহ রক্ষার জন্য স্বামীর মৃত্যুর পর আর অন্যত্র বিয়ে করে না।
ত) তাদের আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- দ্বীনের জ্ঞান অর্জনের জন্য তারা খুবই আগ্রহী হয়।
থ) তারা হারাম-হালাল পার্থক্য করে চলে।
দ) তারা দা‘য়ীয়াহ ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ্‌র দিকে আহ্বানকারীণী) হয়।

 

ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) আমি অনেক মা-বাবাকে দেখেছি সন্তানের অনুমতি না নিয়ে বিয়ে ঠিক করে। এবং সন্তান বিয়েতে অমত প্রকাশ করলেও তারা তা না শুনে বিয়ে ঠিক করে এবং বিয়ের দিন মেয়ে/ছেলে যদি বিয়ের প্রতি অমতের কারণে ক্বাবূল না বলে, তখন বাবা-মা বা অন্য কোনো ব্যক্তি ক্বাবূল বলে। এটা কি ঠিক?
আবার অনেক সময় দেখা যায়, বিয়েতে অমত প্রকাশ করলে মা-বাবা সন্তানকে ব্লাকমেইল করে, আত্মহত্যা করার হুমকি দেয়, আবার সন্তানকে মারধর করে জোর করে বিয়ে দেয়। অনেক সময় মা-বাবার পাশাপাশি চাচা/মামারা মারধর করে বা জোর করে বিয়ে দেয়। এই বিয়ে কি গ্রহণযোগ্য?
এরূপ ক্ষেত্রে পরবর্তীতে দেখা যায়, এই বিয়ে সুখের হয় না। তখনও মা-বাবা বা অন্যরা মান-সম্মানের কথা বলে তালাক দিতে নিষেধ করেন বা স্বামীর/স্ত্রীর অনেক সম্পত্তি আছে, টাকা আছে, এগুলো বলে তালাক দিতে দেয় না। তখন করণীয় কি?
২) আমাদের কিছু বিয়েতে দেখেছি, বিয়ের সময় মেয়ের সম্মতি নিতে মেয়ের সাথে একজন উকিল বাবা কথা বলে, যে আবার আজনাবী। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- উকিল বাবা বলে ইছলামে কিছু আছে কি? যে আবার মেয়ের জন্য আজনাবী আর মেয়ের সাথে কথাও বলেন। এইটা কি ঠিক ?
৩) السلام عليكم ورحمة الله وبركاته।
আমাদের সমাজে দেখা যায় একটা প্রস্তাব নিয়ে বর কিংবা কনে পক্ষ মাসের পর মাস পার করে দেয়, অনেক সময় বছরও পার হয়ে যায়। চিন্তা ভাবনা কিংবা বুঝ পরামর্শের নামে এই ধরনের সময় ক্ষেপণের কারণে বেশির ভাগ সময় অপর পক্ষ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কনেপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। এই বিষয়ে ইছলামের বিধান কি? চিন্তা-ভাবনা বা বুঝ-পরামর্শ করার জন্য কতটুকু সময় ব্যয় করা ছুন্নাহসম্মত?
৪) কোনো ভাইয়ের বাবা-মা যদি যথেষ্ট দ্বীনদার না হন, দ্বীনের সঠিক বুঝ না থাকে, তবে বিয়ের কনে নির্বাচনের সময় তাদের তরফ থেকে অনেক দুন্‌ইয়াওয়ী দাবি-দাওয়া বা চাওয়া থাকে। দ্বীনের বুঝ কম থাকায় দ্বীনের বিষয়গুলো তাদের কাছে কম গুরুত্ব পায়। এমতাবস্থায় পক্ষে কনে নির্বাচন ও পরবর্তী সবগুলো ধাপেই দ্বীনদার ভাইকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঐ ভাই হয়তো বিয়ের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন কিংবা শয়তানের ওয়াছওয়াছার কারণে বিয়ে বাদ দিয়ে দুন্‌ইয়াওয়ী অন্যান্য কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলেন। যেসমস্ত ভাইয়েরা এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন, তাদের প্রতি আপনার নাসীহাহ কী?
৫) মেয়ের ভাই, দাদা, চাচা বলে কেউ নেই, তাহলে ওই মেয়ের ওয়ালী কে হতে পারে?
৬) ইখলাস এর জন্য কি করা উচিত? দেখা যায় যে, কোনো কাজ করতে গেলে খারাপ চিন্তা আসে, যদিও শুরুতে নিয়ত ভালো থাকে।
৭) একটি মুছলিম পরিবারে বাবা মারা গেছেন, এখন মা ছেলেকে বিয়ে করানোর জন্য আর্থিকভাবে সাহায্য করতে চাচ্ছেন না। মা ছেলেকে বলেছেন যে, তুমি তোমার বিয়ের খরচ জোগাড় করে বিয়ে করবে। আমার থেকে কিচ্ছু পাবে না।
আরো বলেছেন- আমাদের পরিবারে ছেলেরা সবাই যতক্ষণ নিজের পায়ে না দাঁড়ায়, নিজের বিয়ের খরচ করতে সক্ষম না হয়, ততক্ষণ সে বিয়ে করে না, কাজেই আমার কাছ থেকে কোনো সাহায্য আশা করো না। অথচ ঐ ছেলের বাবা বাংলাদেশে একটি পাঁচতলা বাড়ি রেখে গেছেন, যার নিয়ন্ত্রণ ছেলেটির মায়ের কাছে। ছেলের বয়স এখন পঁচিশ বছর আর এখনো কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করেনি। এক্ষেত্রে মা এবং ছেলের প্রতি আপনার পরামর্শ কি?
৮) যেখানে বাবা-মায়ের প্রতি ইহ্‌ছান করতে বলা হয়েছে, সেখানে কখন বাবা-মা কে ছেড়ে যাওয়া যায়?
৯) ওয়ালী সহ সবার সম্মতি নিয়ে কিন্তু “কুফু” ছাড়া, বেশি খরচে, বেশি মোহরে বিয়ে হয়ে গেলে এবং বিয়ে পরবর্তী যেকোন সময়ে ভুল উপলব্ধি করতে পারলে করণীয় কি, এক্ষেত্রে কোন “কাফ্‌ফারা” আছে কি? শাইখ আমাদের কে অনগ্রহপূর্বক নাসীহা দিন।
১০) কোন দ্বীনি ভাই যদি বিয়ে করার জন্য অন্যান্য দ্বীনি ভাই-বোনদের কাছে নিজের ও নিজের পরিবারের বিবিধ দোষ-ত্রুটি গোপন করে, সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি? এইরূপ পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য কি ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?
কোন ব্যক্তি বিয়ের পর যখন বিভিন্ন কৌশলে স্বীয় স্ত্রীকে বিয়ের সময় দেওয়া মোহর নিয়ে নেয় (নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য), তখন সে ভাইয়ের প্রতি আমাদের নাসীহা কি হওয়া উচিত?
১১) শাইখ, আমি ঢাকাতে থাকি। আমি আমার বাচ্চাকে একটি মুছলিম স্কুলে পাঠাতে চাই। আমি ঢাকাতে ছালাফী মানহাজের উপর কোনো স্কুল পাচ্ছি না। আপনি কি আমাকে কোনো ছালাফী স্কুল সম্পর্কে বলতে পারেন?
বাবা-মায়েদের প্রতি আপনার পরামর্শ কি?


১. মুত্তাফাক্বোন আলাইহি 
২. জামি‘উত্‌ তিরমিযী, ছুনানু ইবনি মাজাহ 
৩. মুছনাদুল ইমাম আহ্‌মাদ 
৪. সাহীহ্‌ মুছলিম, ছুনানুন্‌ নাছায়ী, ছুনানু ইবনি মাজাহ 

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close