নারীদের সম-সাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং তা থেকে উত্তোরণের ক্বোরআন-ছুন্নাহ ভিত্তিক পথ ও পদ্ধতি (১৫তম পর্ব)

উছতায আবূ ছা‘আদাহ হাম্মাদ বিল্লাহ c এই অডিও বক্তব্যে নারীদের সম-সাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং এসকল সমস্যা থেকে উত্তোরণের পথ ও পদ্ধতি বিষয়ে ক্বোরআন-ছুন্নাহ্‌র আলোকে অত্যন্ত মূল্যবান আলোচনা পেশ করেছেন। পারিবারিক এবং বৈবাহিক জীবনে নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হওয়া, সন্তানদের লালন-পালন করা, সুখী ও সমৃদ্ধ পরিবার গড়ে তোলা, ঘরের বাইরে কাজ-কর্ম করা ইত্যাদি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া বিশেষভাবে এখানে কথার দ্বারা পাপ করার এবং অভিসম্পাত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। উক্ত বক্তব্য থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ ক’টি বিষয় নিম্নে উল্লেখ করা হলো:-
১) অভিসম্পাতের সংজ্ঞা। উছতায এখানে অভিসম্পাতের বিভিন্ন উদাহরণ পেশ করেছেন।
২) মা-বাবা কিংবা কোন মুছলমানকে গালি বা অভিশাপ দেয়া গুনাহে কাবীরাহ। রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-

لَعْنُ الْمُؤْمِنِ كَقَتْلِهِ.رواه البخاري

অর্থ- কোন মূমিন ব্যক্তিকে অভিসম্পাত করা তাকে হত্যা করার ন্যায় (জঘন্য কাজ)।সাহীহ্‌ বুখারী
৩) কোন মুছলমানকে অভিসম্পাত করা মুছলিম ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-

لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ، وَلَا اللَّعَّانِ، وَلَا الْفَاحِشِ، وَلَا الْبَذِيءِ.رواه الترمذي

অর্থ- মূমিন ব্যক্তি পরনিন্দাকারী, অভিসম্পাতকারী, বে-হায়া কিংবা ইতর প্রকৃতির হতে পারে না।জামে‘ তিরমিযী
৪) অত্যাচারের দরুণ অভিসম্পাতের ভয়াবহ কুফল।
৫) মুছলিম নারীদের প্রতি সতর্কতা। অভিসম্পাত করার কারণেই অধিকাংশ নারী জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। অনেক মহিলা খুব সামান্য কারণেই স্বীয় স্বামী কিংবা পরিবারের অন্য কোন সদস্যকে অভিসম্পাত তথা তাদের জন্য মন্দ কামনা করে থাকেন।
৬) ছুনানু আবী দাঊদে আবুদ্‌ দারদা 3 বর্ণিত নিম্নোক্ত হাদীছটির ব্যাখ্যা, যেখানে রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-

إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا لَعَنَ شَيْئًا صَعِدَتْ اللَّعْنَةُ إِلَى السَّمَاءِ فَتُغْلَقُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ دُونَهَا ثُمَّ تَهْبِطُ إِلَى الْأَرْضِ فَتُغْلَقُ أَبْوَابُهَا دُونَهَا ثُمَّ تَأْخُذُ يَمِينًا وَشِمَالًا فَإِذَا لَمْ تَجِدْ مَسَاغًا رَجَعَتْ إِلَى الَّذِي لُعِنَ فَإِنْ كَانَ لِذَلِكَ أَهْلًا وَإِلَّا رَجَعَتْ إِلَى قَائِلِهَا.

অর্থ- বান্দাহ যখন কোন কিছুকে অভিশাপ দেয়, সেই অভিশাপ আকাশের দিকে উঠে। তখন তার জন্য আকাশের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, তাই তা আবার যমীনের দিকে নেমে আসে, আর তখন যমীনের দরজাগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন সেটি ডানে-বামে খুঁজতে থাকে। যদি কোন রাস্তা না পায়, তাহলে যাকে অভিশাপ দেয়া হয়েছে সে যদি প্রকৃতই অভিশাপের উপযুক্ত হয়ে থাকে, তাহলে তার দিকে ফিরে যায় (তার উপর পতিত হয়)। নতুবা যে ব্যক্তি অভিশাপ দিয়েছে (তার অভিশাপ) তার দিকেই ফেরত আসে (অর্থাৎ তার উপরই পতিত হয়)।
৭) ছূরা আ-লে ‘ইমরানের ১২৮নং আয়াতের ব্যাখ্যা-
আল্লাহ 7 ইরশাদ করেছেন:-

لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ.

অর্থাৎ- তিনি তাদেরকে ক্ষমা করেন অথবা শাস্তি প্রদান করেন এ ব্যাপারে তোমার কোনই করণীয় নেই, নিশ্চয়ই তারা অত্যাচারী।ছূরা আলে ইমরান- ১২৮
৮) কাউকে অভিসম্পাত করা কখন বৈধ বা অনুমোদিত?
৯) উদাহরণ স্বরূপ সাহীহ্‌ মুছলিমে ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাছ‘ঊদ 3 থেকে বর্ণিত যে, রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-

لَعَنَ اللهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْمُسْتَوْشِمَاتِ، وَالنَّامِصَاتِ وَالْمُتَنَمِّصَاتِ، وَالْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ.

অর্থ- যে ব্যক্তি ট্যাটু অঙ্কন করে ও যে ব্যক্তি ট্যাটু অঙ্কন করায়, যে ব্যক্তি ভ্রু প্লাক করে এবং যে ব্যক্তি ভ্রু প্লাক করায় এবং যে ব্যক্তি কৃত্রিম সৌন্দর্যলাভের জন্য দাঁত ফাঁক করে আল্লাহ্‌র (0) সৃষ্টিতে পরিবর্তন ঘটায়, আল্লাহ্‌র অভিসম্পাত তার প্রতি।

 

ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করা হয়:
ক) السلام عليكم। আমরা অনেক সময় দো‘আ করি যে, হে আল্লাহ অমুক লোককে হিদায়াত দান করুন আর যদি তার ভাগ্যে হিদায়াত না থাকে তাহলে তাকে উঠিয়ে নিন। এটা বলা কি ঠিক? এসমস্ত দো‘আ কোন কোন ক্ষেত্রে করা যাবে?
খ) السلام عليكم। কেউ যদি দুষ্টোমির ছলে অভিসম্পাত করে, তাহলে তার প্রতি আমাদের কাজ কি হবে?


১. رواه البخاري 
২. সাহীহ্‌ বুখারী 
৩. رواه الترمذي 
৪. জামে‘ তিরমিযী 
৫. ছূরা আলে ইমরান- ১২৮ 

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close