করোনাভাইরাস সম্পর্কিত ইছলামিক দৃষ্টিভঙ্গি (৩য় পর্ব)

১) এই মহামারীর সময় আমাদের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা কি হওয়া উচিত?
এই মুহূর্তে অমুছলীমরা তো বটেই, এমনকি হয়তো ৭০% মুছলীমও ভ্যাক্সিনের আশায় বসে আছে। এটি একটি আক্বিদা পরিপন্থী বিষয়। অথচ, ১০০% মুছলীমের এই প্রত্যাশাই হওয়া উচিত যে, কখন তাঁর রবের রাহমাতের দরজা খুলবে এবং, তিনি আমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন অতঃপর তাঁর এই আযাব আমাদের থেকে উঠিয়ে নেবেন। আল্লাহ 0 কুরআনে কারীমে বলেন, وَ اِنۡ یَّمۡسَسۡکَ اللّٰہُ بِضُرٍّ فَلَا کَاشِفَ لَہٗۤ اِلَّا ہُوَ অর্থঃ আল্লাহ তোমার কোন ক্ষতি করতে চাইলে তিনি ছাড়া কেউ তা সরাতে পারবে না। (আন’আমঃ১৭)
২) হাদীছ থেকে জানা যায় যে, আল্লাহ 0 এই তা’উন সর্বপ্রথম বানী ইসরাইল এর উপর প্রেরণ করেছিলেন। তারই একটা অংশ তিনি এই পৃথিবীতে রেখে দিয়েছেন। যার দ্বারা বানী আদমকে তিনি পরীক্ষা করেন কিংবা, তাদেরকে শাস্তি দেন। তাই আমরা এই পরিস্থিতিতে বিচলিত হবোনা। আমি যদি পরিপূর্ণ তাওহীদের উপরে থাকতে পারি তবে, যেভাবেই আমার মৃত্যু আসুক না কেনো আমি মোটেই পরোয়া করিনা। পক্ষান্তরে কুফফারদের অবস্থা ঠিক এর বিপরীত হবে। যেমন, কুরআনে কারীমে আল্লাহ 0 বলেন, وَ لَا یَتَمَنَّوۡنَہٗۤ اَبَدًۢا بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ অর্থঃ কিন্তু তাদের হাত যে সব (কৃতকর্ম) আগে পাঠিয়েছে, সে কারণে তারা কক্ষনো মৃত্যুর
কামনা করবে না।জুমু’আঃ৭
৩) কুরআনে কারীমে আল্লাহ 0 বলেন, اَیۡنَ مَا تَکُوۡنُوۡا یُدۡرِکۡکُّمُ الۡمَوۡتُ وَ لَوۡ کُنۡتُمۡ فِیۡ بُرُوۡجٍ مُّشَیَّدَۃٍ অর্থঃ তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদেরকে পেয়ে বসবেই, যদিও তোমরা সুউচ্চ সুদৃঢ় দূর্গ মধ্যে অবস্থান কর।নিসাঃ৭৮
কিন্তু, এই কোয়ারান্টাইনের ব্যাপারটি হল একটি বাহ্যিক উপায় অবলম্বন করা। এটি জায়েয আছে। কিন্তু, এর দ্বারা যদি কেউ মনে করে যে, এই কোয়ারান্টাইনের ফলে আমি সম্পূর্ণ নিরাপদ, তবে সেটা হবে আক্বিদার পরিপন্থী বিষয়। আমাদের তাওয়াককুল হবে পরিপূর্ণরূপে আল্লাহ এর উপরে। এই ব্যাপারে কুরআনে কারীমে আল্লাহ 0 বলেন, وَ مَنۡ یَّتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ فَہُوَ حَسۡبُہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بَالِغُ اَمۡرِہٖ অর্থঃ যে কেউ আল্লাহর উপর ভরসা করে, তবে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।ত্বলাকঃ৩
৪) এই মহামারীর কারণে ঘটিত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি ঘটেছে তা হল, আমরা মাসজিদে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছি। জুমু’আ ও জামাতের সালাত বন্ধ হয়ে আছে। ক্বাবা ঘরের তাওয়াফ ও বন্ধ হয়ে আছে। অথচ, এই ঘর সম্পর্কে আল্লাহ 7 কুরআনে কারীমে বলেন, وَ مَنۡ دَخَلَہٗ کَانَ اٰمِنًا অর্থঃ যে কেউ তাতে প্রবেশ করবে নিরাপদ হবে।নিসাঃ৯৭
কিন্তু, আমাদের উপলব্ধিতে সেই ঘর আজকে আমাদের জন্য অনিরাপদ হয়ে গেছে। মুছলমানদের উপরে এর চেয়ে বড় মুসীবত আর হতে পারেনা। এগুলি সবই আমাদের গুনাহের কারণে সংঘটিত হচ্ছে। তাই, আমাদের উচিত বেশি বেশি করে আল্লাহ এর ইছতিগফার করা।


১. জুমু’আঃ৭ 
২. নিসাঃ৭৮ 
৩. ত্বলাকঃ৩ 
৪. নিসাঃ৯৭ 

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close