করোনাভাইরাস সম্পর্কিত ইছলামিক দৃষ্টিভঙ্গি (২য় পর্ব)

১) এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে আমাদের কী করা উচিৎ?

ক) যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে যায়, তবে তাঁর উচিৎ হবে এটাকে আল্লাহ এর ফায়সালা হিসেবে মেনে নেয়া।
খ) যদি এর ফলে কোনও মুমীন মৃত্যুবরণ করে, তবে এই তা’উন হচ্ছে তাঁর জন্য রাহমাহ। কারণ, তা’উন হচ্ছে প্রকৃত মুছলিমদের জন্য শাহাদাত স্বরূপ।
গ) কেউ যদি তা’উন আক্রান্ত এলাকা থেকে পলায়ন করে, তবে সে হবে যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়নকারীর ন্যায়।
ঘ) তা’উন আক্রান্ত এলাকা থেকে কারো বের হওয়া উচিৎ নয়। এবং, আক্রান্ত এলাকায় কারো প্রবেশ করাও উচিৎ নয়।

২) তা’উন যদি আল্লাহ (0) এর পক্ষ থেকে আযাব হয়ে থাকে, তবে তা আবার মুমিনদের জন্য রাহমাহ হয় কিভাবে?
সাধারণ ভাবে এটি আল্লাহ (0) এর পক্ষ থেকে আযাব। যখন এই আযাব কোনও এলাকায় আক্রমণ করে, তখন এটা মন্দ লোকদের পাশাপাশি ভালো লোকদেরকেও আক্রমণ করে। এই তা’উন দ্বারা যদি কোনও মুমিন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে, তবে হাদীছের ভাষ্য অনুযায়ী সে শাহাদাত লাভ করবে।
৩) সরকারীভাবে যে সকল বিসয়গুলোকে পালন করতে বলা হয়েছে, সেগুলো যদি শারীয়াত কর্তৃক হারাম না হয়, তবে সেগুলো পালন করা যাবে। যেমন, কিছুক্ষন পর পর হাতমুখ ধোওয়া, মুখে মাস্ক পরিধান করা ইত্যাদি। বিজ্ঞানীরা যে হ্যান্ড স্যানিটাইযার ব্যবহার করতে বলেন যেমন, হেক্সিসল। এগুলোর মধ্যে যদি এলকোহল থেকে থাকে তবে, এটি আমরা তখনই ব্যবহার করব যদি পরবর্তীতে আমরা হাত ধুয়ে নিতে পারি।
৪) করোনার মূল প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হচ্ছে, দু’আ ও ইছতিফফার। এছাড়াও নিমোক্ত আমল বা, দু’আ সমূহ পড়া যেতে পারে। যেমন,

ক) প্রচুর তাওবাহ ও ইস্তিগফার করতে হবে।
খ)اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَالْجُنُونِ وَالْجُذَامِ وَمِنْ سَيِّئِ الأَسْقَامِ ‏
গ) ছূরাতুল ফাতিহা
ঘ) ছূরাতুল ইখলাস, ছূরাতুল ফালাক ও ছূরাতুল নাছ (সকাল-সন্ধ্যা)
ঙ) আয়াতুল কুরছী (সকাল-সন্ধ্যা)
চ) بِسْمِ اللهِ الَّذِيْ لا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلا فِي الْسَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ (সকাল-সন্ধ্যাঃ৩বার করে)
ছ) أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
জ) ওযু অবস্থায় থাকতে হবে।

৫) এই করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে কোনও স্পেশাল আমল আবিষ্কার করা যাবেনা। কারণ, সকল নব আবিষ্কৃত আমলই বিদআত। এক্ষেত্রে কারো স্বপ্ন কোনও দলীল হতে পারেনা। যতক্ষন পর্যন্ত না তাঁর স্বপ্নের স্বপক্ষে কমপক্ষে কোনও আছার পাওয়া না যাবে। যদি কমপক্ষে কোনও আছার পাওয়া যায়, তবে তাঁর স্বপ্নের আমলটি শুধুমাত্র তাঁর নিজের জন্য প্রযোজ্য হবে। আপামর উম্মাতের জন্য নয়।
৬) এই সময়ে খাদ্য মজুদ করার ব্যাপারে কি মাছ’আলা রয়েছে?
এই ব্যাপারটি পুরোপুরি হারামও বলা যাবেনা। আবার পুরোপুরি জায়েযও বলা যাবেনা। খাদ্য মজুদের ২টি অবস্থা রয়েছে। একটি হল, ব্যবসায়ীদের খাদ্য মজুদ। আরেকটি হল সাধারণ ভোক্তাদের খাদ্য মজুদ। ব্যবসায়ীদের জন্য় বাজারে কৃ্ত্রিম সংকট তৈরির উদ্দেশ্যে খাদ্য মজুদ করা হারাম। আর সাধারণ ভোক্তাগণ সর্বোচ্চ চল্লিশ দিনের খাদ্য মজুদ করতে পারবেন কিছু শর্ত সাপেক্ষে।
৭) করোনা আক্রান্ত কোনও মুছলীম মারা গেলে এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি?

ক) তার জন্য অবশ্যই জানাযার সালাত আদায় করতে হবে। এটা ফারযে কিফায়া।
খ) তাকে অবশ্যই গোসল দিতে হবে। এটা ওয়াজিব। (প্রয়োজনে নিরাপদ পোষাক পরে হলেও)

১৮) যদি কেউ আক্রান্ত হএ যায়, তবে তাঁর জন্য জুমুআ ও জামাতে শরিক হওয়া হারাম।
আর, সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে যদি সরকার থেকে আদেশ আসে, তবে তাদেরও ঘরেই সালাত আদায় করতে হবে।

 

ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) ডাক্তারদের জন্য সরকারের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় পিপিই দেওয়া হচ্ছেনা। তাই, অনেক ডাক্তারের পরিবার থেকে তাদেরকে তাদের কর্মস্থলে যেতে বারণ করা হচ্ছে। কিন্তু, এতে তাদের চাকরি চলে
যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে ডাক্তারদের করণীয় কি রয়েছে?

Subscribe to our mailing list

* indicates required
Close