সালাত ফার্য হওয়ার জন্য রয়েছে ৩টি শর্ত। এ তিনটি শর্ত একত্রে একসাথে যার মধ্যে পাওয়া যাবে তার উপর সালাত ফার্য।
শর্তগুলো হলো যথা:-
(এক) মুছলমান হওয়া।
শুধু সালাতই নয় বরং অন্যান্য যে কোন ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রেই মুছলমান হওয়া পূর্বশর্ত। কেননা ইছলাম ছাড়া কোন ‘ইবাদাতই আল্লাহ্র (8) নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। একজন লোক ইছলাম গ্রহণ করার পরই কেবল তার উপর ইছলামের অন্যান্য আদেশ-নিষেধগুলো বর্তাবে। আর মুছলমান হলো সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে (7) একমাত্র সত্যিকার রাব্ ও মা‘বূদ বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস ও স্বীকার করে, মুহাম্মাদকে (1) আল্লাহ্র রাছূল বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস ও স্বীকার করে এবং ইছলামকে একমাত্র দ্বীন বলে সর্বতোভাবে (মনে-প্রাণে, কথায় ও কাজে) গ্রহণ করে।
অমুছলিমদের যাবতীয় ‘ইবাদাত প্রত্যাখ্যাত। তারা যদি পৃথিবী ভর্তি স্বর্ণও ভালো কাজে ব্যয় করে তথাপি তা আল্লাহ্র (0) নিকট গৃহীত হবে না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহ্র (0) এককত্বে এবং রাছূল 1 এর রিছালাতে পরিপূর্ণরূপে বিশ্বাসী হবে।
এ সম্পর্কে ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন:-
وَقَدِمْنَا إِلَى مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَنْثُورًا.سورة القرقان- ٢٣
অর্থাৎ:- আমি তাদের কৃতকর্মগুলো সামনে আনব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধুলি-কণায় পরিণত করব।ছূরা আল ফুরক্বান- ২৩
(দুই) জ্ঞানবান তথা ভালো-মন্দ বুঝতে সক্ষম হওয়া।
কান্ড-জ্ঞানহীন ব্যক্তির উপর শারী‘য়াতের কোন বিধানই প্রযোজ্য নয় যতক্ষণ না তার জ্ঞান-বুদ্ধি ফিরে আসে। তাই শারী‘য়াতের বিধান থেকে তিন ব্যক্তি দায়মুক্ত- (১) ঘুমন্ত ব্যক্তি (২) পাগল (৩) ছোট বাচ্চা। এর প্রমাণ হলো- রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-
رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ، وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَحْتَلِمَ، وَعَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يَعْقِلَ.رواه أحمد و البيهقي
অর্থ- তিন ধরনের লোকের কোন হিসাব লিখা হয় না- ঘুমন্ত ব্যক্তি যে পর্যন্ত না ঘুম থেকে জাগ্রত হয়, ছোট বাচ্চা যে পর্যন্ত না প্রাপ্তবয়স্ক (বালিগ) হয়, পাগল যে পর্যন্ত না জ্ঞান ফিরে পায়।মুছনাদে ইমাম আহমদ, ছুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী
(তিন) প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।
কারো উপর সালাত, সিয়ামসহ ইছলামের যে কোন ‘ইবাদাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য শারী‘য়াত নির্ধারিত মানদন্ডে তার প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পূর্বশর্ত। কেননা ভালো-মন্দ বুঝার মত বয়সে উপনীত হওয়া, এটা হলো শারী‘য়াতের বিধানাবলী উপলব্ধি ও গ্রহণ করার যথাযথ সময়।
এর প্রমাণ হলো উপরোল্লেখিত হাদীছ। এতে রাছূল 1 বলেছেন যে, শিশু বালিগ না হওয়া পর্যন্ত তার কোন হিসাব লিখা হয় না।মুছনাদে ইমাম আহমদ, ছুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী
সূত্র:-
(১) শাইখুল ইছলাম মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দিল ওয়াহ্হাব o সংকলিত “মাতনু শুরুতিস্ সালাত ওয়া আরকানুহা ওয়া ওয়াজিবা-তুহা”।
(২) ফিক্বহুছ্ ছুন্নাহ্ লি আছ্ছায়্যিদ ছাবিক্ব o।
(৩) আল ফিক্বহু ‘আলাল মাযাহিবিল আরবা‘আ লিশ্ শাইখ ‘আব্দুর রাহ্মান আল জাযীরী o।
(৪) ‘আল্লামা আশ্ শাইখ ইবনু বায o সংকলিত “কাইফিয়াতু সালাতিন্ নাবী 1”।
(৫) ‘আল্লামা নাসিরুদ্দ্বীন আল আলবানী o সংকলিত “সিফাতু সালাতিন্ নাবী 1”
(৬) আশ্শাইখ আল ‘আল্লামা আমান আল জামী o সংকলিত “শারহু মাতনি শুরুতিস্ সালাত ওয়া আরকানিহা ওয়া ওয়াজিবাতিহা”।
(৭) ‘আল্লামা আশ্ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু সালিহ্ আল ‘উছামীন o সংকলিত “ফিক্বহুল ‘ইবাদাত”।
(৮) ‘আল্লামা আশ্ শাইখ সালিহ্ আল ফাওযান c সংকলিত “আল মুলাখ্খাসুল ফিক্বহী”
(৯) ‘আল্লামা মুহাম্মাদ ইবনু জামীল যাইনূ o সংকলিত “আরকানুল ইছলাম ওয়াল ঈমান”।