এটি উছতায আবূ ছা‘আদা হাম্মাদ বিল্লাহ c প্রদত্ত একটি ধারাবাহিক অডিও বক্তব্য। উক্ত ধারাবাহিক বক্তব্যে উছতায পবিত্র ক্বোরআনের ছূরা সমূহের তাফছীর প্রদান করবেন, إِن شَاء اَللّٰه। বক্তব্যের এই পর্বে উছতায তাফছীরের নিয়ম-নীতি ও ‘উলূমুল ক্বোরআন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। নিম্নোক্ত বইসমূহ উৎস হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে-
ক) আল ‘আল্লামা ‘আব্দুল্লাহ আছ্ ছা‘দী o রচিত এবং শাইখ সালিহ্ আল ‘উছাইমীন o কর্তৃক ব্যাখ্যাকৃত আত-তা‘লীক্ব ‘আলাল ক্বাওা‘য়ীদ আল-হিছান।
খ) আল ‘আল্লামা মুহাম্মাদ ‘আলী আস্ সাবূনী o রচিত আত্ তিবয়ান ফী ‘ঊলূমিল ক্বোরআন।
গ) আল-‘আল্লামা ছুয়ূতী o রচিত আল-ইতক্বান।
এছাড়াও ছালাফদের রচিত আরো কিছু বই থেকে সারাংশ উপস্থাপন করা হবে, إِن شَاء اَللّٰه।
এই পর্বের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো- “তাফছীরের প্রকারভেদ”।
১) তাফছীর কত প্রকার ও কি কি?
তাফছীর প্রধানতঃ তিন প্রকার-
ক) তাফছীর বির্-রিওয়ায়াহ বা তাফছীর বিল মানক্বূল।
খ) তাফছীর বিদ্-দিরায়াহ বা তাফছীর বির্-রায়।
গ) তাফছীর বিল ইশারাহ বা তাফছীরে ইশারী।
২) তাফছীর বিল মানক্বূল- যে তাফছীর বর্ণনা নির্ভর। তাফছীর বিল মানক্বূল আবার তিন প্রকারের-
ক) তাফছীরুল ক্বোরআন বিল ক্বোরআন। আর তা হলো- ক্বোরআনে কারীমের একটি আয়াতকে অন্য এক বা একাধিক আয়াত দ্বারা ব্যাখ্যা করা।
খ) তাফছীরুল ক্বোরআন বিছ্-ছুন্নাহ। অর্থাৎ ক্বোরআনে কারীমের আয়াতকে হাদীছ দ্বারা ব্যাখ্যা করা।
গ) তাফছীরুল ক্বোরআন বি আক্বওয়ালিস্ সাহাবাহ। অর্থাৎ ক্বোরআনে কারীমের আয়াতকে সাহাবায়ে ক্বিরামের কথা দ্বারা ব্যাখ্যা করা।
তাফছীরে মানক্বূলের এই প্রকারগুলো উদাহরণসহ শাইখ আলোচনা করেছেন।
৩) তাফছীরের ক্ষেত্রে অনেক সময় ইছরাঈলী বর্ণনা পাওয়া যায়। এজাতীয় রিওয়ায়াত ও তাফছীরের ক্ষেত্রে হুক্ম কি হবে?
ইছরাঈলী রিওয়ায়াতের ভিত্তিতে কোন হুক্ম ও ‘আমাল গ্রহণ করা যাবে না। এগুলোর বিষয়ে আমাদের অবস্থান হবে- আমরা এগুলোর কিছু মেনেও নিব না আবার অস্বীকারও করবো না। কারণ, বানী ইছরাঈলের কিতাব আল্লাহ্র (7) পক্ষ থেকেই নাযিলকৃত, কিন্তু তারা এর মধ্যে বাত্বিল অনেক কিছুর সংমিশ্রণ ঘটিয়ে দিয়েছে।
৪) বিশুদ্ধতার দিক থেকে তাফছীরে মানক্বূল আবার দুই প্রকার-
ক) তাফছীরে মানক্বূলের যে বিষয়গুলো বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত, এগুলো নির্দ্ধিধায় মেনে নিতে হবে। কোনভাবেই একে প্রত্যাখ্যান করা যাবে না।
খ) তাফছীরে মানক্বূলের যে বিষয়গুলো বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়, সেগুলো সাধারণভাবে গ্রহণ করা যাবে না, যেমন- দুর্বল রিওয়ায়াত।
৫) তাফছীর বির্রায়- যে তাফছীর মুফাছ্ছিরের (বিশুদ্ধ নীতিমালার ভিত্তিতে) ইজতিহাদ নির্ভর, তাকেই তাফছীর বির্ রায় বলে। এক্ষেত্রে কোন মুফাছ্ছির চাইলেই নিজের মনগড়া কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। কেউ যদি এরূপ করে, তবে সেটিকে তাফছীর বির্রায় আল মায্মূম বলা হয়।
বিশুদ্ধতার দিক থেকে তাফছীর বির্রায়ও দুই ভাগে বিভক্ত-
ক) মামদূহ্; তাফছীরের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ নীতিমালার ভিত্তিতে মুফাছ্ছিরের ইজতিহাদকেই তাফছীর বির্রায় আল মামদূহ্ বলে।
মায্মূম, যে তাফছীরের পক্ষে শারী‘আতে পরোক্ষভাবেও কোন দালীল পাওয়া যায় না, সেই তাফছীরকে তাফছীর বির্রায় আল মাযমূম বলে।
৬) তাফছীর বির্রায় আল মামদূহ্ করার দু’টি প্রধান পূর্বশর্ত হলো-
ক) মুফাছ্ছিরের মধ্যে তাফছীর করার জন্য পরিপূর্ণ যোগ্যতা থাকতে হবে। (এ প্রসঙ্গে ১০নং পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।)
খ) মুফাছ্ছিরকে অবশ্যই ক্বোরআন ও ছুন্নাহ্র ভিত্তিতে তাফছীর করতে হবে।
৭) তাফছীর বির্রায় জায়িয না কি না-জায়িয?
এই ব্যাপারে ‘উলামায়ে কিরামের মধ্যে দ্বিমত পরিলক্ষিত হয়, কারো মতে এটি কোনোভাবেই জায়িয নয়। তাদের মতে, তাফছীর জানার একমাত্র মাধ্যম হলো ক্বোরআন ও ছুন্নাহ। আর জামহূর ‘উলামায়ে কিরামের মতে, তাফছীর বির্রায় শর্তসাপেক্ষে জায়িয। শাইখ উভয় পক্ষের মতামত দালীল সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
ক্লাস শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নটির উত্তর প্রদান করা হয়:-
১) রোযা ক্বাযা থাকা অবস্থায় যদি কেউ মারা যায়, তাহলে সেই রোযাগুলো কি মৃতের সন্তানরা রাখবে, না কি মৃতের পক্ষ থেকে সাদাক্বাহ করবে? যদি ক্বাযা রোযার পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে কি করতে হবে?