শাইখ হাম্মাদ বিল্লাহ c কর্তৃক এই অডিও বক্তৃতাটি হলো মূলত ইমাম ইবনুল ক্বায়্যিম o প্রণীত -‘উদ্দাতুস্ সাবিরীন ওয়া যাখীরাতুশ্ শাকিরীন- নামক কিতাবের ভাষান্তর। গ্রন্থকার ইছলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে -সাব্র বা ধৈর্য্য, অধৈর্য্য এবং শুক্র বা কৃতজ্ঞতা- এ ক‘টি গুরুত্বপূর্ণ দ্বীনী বিষয়ের অনুশীলনমূলক কাঠামো এবং এগুলোকে কিভাবে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে সংযুক্ত ও রপ্ত করা যায়, সেসব বিষয়ে অত্যন্ত চমৎকার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়েছেন। গ্রন্থখানি ছয় শতাব্দী পূর্বে লিখা হলেও এর বিষয়-বস্তু অত্যন্ত সময় উপযোগী এবং বর্তমান বাস্তবতার সাথে অতি প্রাসঙ্গিক। ভাষান্তরিত বক্তব্যে শাইখ হাম্মাদ বিল্লাহ c নিম্নোক্ত বিষয়ে আলোচনা করেছেন:-
১) ‘উদ্দাতুস্ সাবিরীন ওয়া যাখীরাতুশ্ শাকিরীন”গ্রন্থেরব্যাখ্যা।
২) ইবনুল ক্বায়্যিম o প্রদত্ত ভূমিকা বিশ্লেষণ।
ক) আল্লাহ্র 0 সুমহান নাম ও গুণাবলী বিশ্লেষণ
খ) রাছূলুল্লাহ 1 এর সাব্র ও সফলতা লাভের বিবরণ।
৩) সাব্র ও শুক্র (কৃতজ্ঞতা) এর তাৎপর্য, সাব্র কি, সাব্রের ফাযীলাত এবং এর প্রকার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন মানুষকে ইছলামের উপর ধৈর্যশীল হতে সাহায্য করে।
৪) সাব্রের ফাযীলাত ও পরিচয় সম্পর্কে ইমাম ইবনুল ক্বায়্যিম আল জাওযিয়্যাহ্ o এর বক্তব্য।
৫) সাব্র করলে সাহায্য আসে।
৬) সাব্র, ইহ-পরকালের সফলতার পথে পরিচালিত করে। শরীরের সাথে যেমন মাথার সম্পর্ক তেমনি সাব্রের সাথে রয়েছে ঈমানের সম্পর্ক।। যার মধ্যে সাব্র বা ধৈর্য নেই তার মধ্যে ঈমান নেই।
সাব্র বা ধৈর্যধারণকারীদের সাথে আল্লাহ আছেন। ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 8 ইরশাদ করেছেন-
وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ.سورة الأنفال- ٤٦
অর্থাৎ- আর তোমরা ধৈর্যশীল হও, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।ছূরা আল আনফাল- ৪৬
৭) আল্লাহ আমাদেরকে বলেছেন যে, তিনি তাদের সাথেই আছেন যারা ধৈর্যশীল। আর এটাই হচ্ছে ধৈর্যশীলদের (সাব্র অবলম্বনকারীদের) দুন্ইয়া ও আখিরাতে সবচেয়ে বড় সফলতা।
৮) দ্বীনে ইছলামে নেতৃত্ব অর্জিত হয় সাব্র ও খালিস তাওহীদী বিশ্বাসের দ্বারা।
৯) নিম্নোক্ত আয়াতের তাফছীর-
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُمْ بِهِ وَلَئِنْ صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِلصَّابِرِينَ.سورة النحل- ١٢٦
অর্থাৎ- আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর (শত্রুপক্ষ থেকে) তাহলে তোমরা প্রতিশোধ লও সেরূপই যেমনটা তোমরা নিপীড়িত হয়েছিলে। আর যদি তোমরা সাব্র অবলম্বন কর তাহলে এটাই ধৈর্যশীলদের জন্য উত্তম।ছূরা আন্ নাহ্ল- ১২৬
১০) আবূ বাক্র-কে (3) গালমন্দকারী এক ব্যক্তি সম্পর্কে আবূ হুরায়রাহ 3 থেকে বর্ণিত একটি ঘটনা।
১১) ক্বোরআনে কারীমে বর্ণিত ক্বিস্সাহ বা ঘটনাবলী
মুছনাদে ইমাম আহ্মাদ ও ছুনানু আবী দাঊদে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ 0 স্বীয় রাছূলকে (1) নির্দেশ দিয়েছেন- তিনি যেন তাঁর (আল্লাহ্র) পক্ষ হতে যেসব নির্দেশ আসে সেগুলোর উপর ধৈর্যধারণ করেন তথা অটল ও অবিচল থাকেন।
যে ব্যক্তি সাব্র ও তাক্বওয়া অবলম্বন করে, শত্রুরা তার কোন ক্ষতি করতে পারে না।
১২) সাব্র সফলতার দিকে নিয়ে যায়।
১৩) ঈমানের দুটি অংশ রয়েছে। অর্ধেক হলো সাব্র এবং অর্ধেক হলো শুক্র।
আলোচনা শেষে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া হয়েছে:-
১) “আলক্বারীব” এটা কি আল্লাহ্র কোন নাম?
ছূরা আল বাক্বারাহ এর ১৮৬ নং আয়াতে আল্লাহ ছুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেছেন:-
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ.
অর্থাৎ- যখন আপনাকে আমার বান্দাহ্গণ আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, অথচ আমি অতি নিকটে।
এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নিকটতর বা অতি কাছে থাকা আল্লাহ্র একটি গুণ। তাহলে “আলক্বারীব” এটা কি আল্লাহ্র কোন নাম? শাইখ ‘উছাইমীন o তাঁর আল ক্বাওয়া‘ইদুল মুছলা গ্রন্থে “আলক্বারীব” শব্দটিকে আল্লাহ্র নাম বলে উল্লেখ করেছেন। দয়া করে বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন।
২) “সাব্র” শব্দের শাব্দিক ও আভিধানিক অর্থ কী? শারী‘য়াতের পরিভাষায় সাব্র কাকে বলে? দয়া করে বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলুন।
৩) মানহাজ ও তাওহীদের মধ্যে সম্পর্ক কী ?
৪) এক ভাই প্রায়ই একটি কথা মূলনীতি হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন যে, “যদি তোমার দা‘ওয়াহ সঠিক হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তোমাকে দুঃখ-কষ্ট মুক্বাবিলা করতে হবে, নতুবা বুঝতে হবে যে তোমার দা‘ওয়াহ পুরোপুরি সঠিক নয়”। আমাদের প্রশ্ন হলো- তার এই কথাটি কি ঠিক? নাকি কোন দা‘য়ী ইলাল্লাহ্-র দা‘ওয়াতের পথ আল্লাহ 0 চাইলে সহজ ও সুগম করে দিতে পারেন, তাকে কোনরূপ দুঃখ-কষ্ট মুক্বাবিলার প্রয়োজন নাও হতে পারে?
৫) কোন এক ব্যক্তি বলেন যে, “যেহেতু কাফিররা বিভিন্ন স্থানে অতর্কিত বিমান হামলা সহ আরো বিভিন্নভাবে নিরপরাধ মুছলমান নারী ও শিশুদের হত্যা করছে, সুতরাং কাফিরদেরও সমসংখ্যক নারী ও শিশুদের হত্যা করা বৈধ”, এ বিষয়ে ছালাফে সালিহীনের বক্তব্য এবং তাদের নীতি ও আদর্শ কী।
৬) কোন অমুছলিম যদি আমাকে কষ্ট দেয় তজ্জন্য তার প্রতি অন্তরে বিদ্ধেষ পোষণ করা যাবে কি? উল্লেখ্য যে, আমি এখনও তার সাথে সুন্দর আচরণ করছি।
৭) সাব্র সম্পর্কে আমাদের ছালাফদের লিখা কিছু গ্রন্থের নাম উল্লেখ করুন।
৮) যে বা যারা বলে যে, “ওদিকে মুছলিম উম্মাহ নির্যাতিত ও লাঞ্চিত হচ্ছে আর আপনি/আপনারা সাব্র তথা ধৈর্য্যধারণের আহবান জানাচ্ছেন”! তাদের প্রতি আমাদের উত্তর কি হবে? আমরা তাদেরকে কি বলব?
৯) কেউ যদি ‘আক্বীদাহ সম্পর্কিত বিষয়ে ছালাফে সালিহীনের (g) মানহাজ অনুসরণ করে, কিন্তু ‘আমাল বা ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে ছালাফে সালিহীনের (g) মানহাজ অনুসরণ না করে, তাহলে কি একথা বলা যাবে যে, সে ছালাফী নয়?
১০) “উসূলুছ্ ছুন্নাহ” ও “শারহুছ্ ছুন্নাহ” ব্যতীত মানহাজ বিষয়ে মূল্যবান আরো দু-একটি বইয়ের নাম বলবেন কি?